বিনামূল্যে পাঠবই দেওয়ার যে রীতি সরকার শুরু করেছিল কোভিড মহামারী ও দরপত্র জটিলতায় চলতি বছর তাতে ছেদ পড়ে।
Published : 29 Oct 2022, 09:01 PM
বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার আশা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এখানে আপোসের সুযোগ নেই। প্রয়োজনে বই ছাপানোর দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী কঠোর বার্তা দিলেও প্রকাশকদের পক্ষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম কাগজের তীব্র সংকটের কথা তুলে ধরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানির সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। তা না হলে ‘১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব না’ বলে সাফ জানিয়ে দেন।
রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দিচ্ছে।
কোভিড মহামারী ও দরপত্র জটিলতায় চলতি বছর এ ধারায় ছেদ পড়ে। এবারও দরপত্র দেরিতে দেওয়ায় বছরের প্রথম দিন বই পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে কাগজ, কালিসহ ছাপার সরঞ্জামের খরচ বাড়ায় এ শঙ্কা আরও বাড়ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলেও শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে আপোসের সুযোগ নেই।
"সন্তানের শিক্ষার বিষয় যেখানে জড়িত, সেখানে আমাদের জন্য কোনোকিছুর সঙ্গে আপোস করার সুযোগ নেই। বই আমাদের লাগবেই এবং সেটা ১ তারিখেই লাগবে। আশা করছি যারা যারা কথা দিয়েছেন, তা তারা রাখবেন।"
কাগজ সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন জানিয়ে দীপু মনি বলেন, "আমার পক্ষে তাদের যা বার্তা দেওয়ার তা দিয়েছি। তারাও কথা দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি তারা তাদের কথা রাখবেন। ১ তারিখে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারব।
"তারপরও কেউ যদি কথার খেলাপ করে, তাহলে আমাদেরও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আমাদের ব্যবস্থা নিতে পিছপা হব না। আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে ১ তারিখে বই দিতে বদ্ধপরিকর।"
সংকটময় পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও ধুঁকছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এখন আমাদের টিকে থাকার সময়। তার পাশাপাশি যত কিছু ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব, আমাদের যা যা সমস্যা আছে সেগুলো নিরসন করার- সে কাজগুলো থেমে নেই।"
অনুষ্ঠানে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, “কাগজের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আগামী বছরের জন্য বিনামূল্যে বই ছাপাতে যে পরিমাণে কাগজ প্রয়োজন, তার ৫০ শতাংশ কাগজ শুল্কমুক্ত আমদানি না করলে ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব না।”
এ বিষয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সুপারিশ তুলে ধরেন সহ সভাপতি শ্যামল পাল।
আরও বক্তব্য দেন সমিতির সহ সভাপতি কায়সার-ই-আলম প্রধান, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, মেহেদী হাসান, মাজহারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন।
আরও পড়ুন: