৩ বইয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুকে সাহিত্য পুরস্কার দিল এফওএসডব্লিউএএল

অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন– এই তিন বইয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুকে এ পুরস্কার দিল ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2023, 02:13 PM
Updated : 26 March 2023, 02:13 PM

তিনটি বইয়ের জন্য বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার’ দিয়েছে ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার-এফওএসডব্লিউএএল।

বাসস জানায়, পাঞ্জাবি ঔপন্যাসিক এবং এফওএসডব্লিউএএল -এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অজিত কৌর রোববার সংগঠনের আঞ্চলিক সম্মেলনে বাংলাদেশি লেখক ও গবেষক রামেন্দু মজুমদার ও মফিদুল হকের হাতে এ পুরস্কার হস্তান্তর করেন।

ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার ২০০১ সালে সার্ক সাহিত্য পুরস্কারের প্রবর্তন করে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন– এই তিন বইয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুকে এ পুরস্কার দেওয়া হল। 

পুরস্কারের ঘোষণায় বলা হয়, “স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান তার দেশের মানুষের কাছে ‘বঙ্গবন্ধু’, আর বিশ্বে নিপীড়িত মানুষের মুক্তির আন্দোলনে তিনি এক প্রবাদতুল্য নাম। মহাত্মা গান্ধী আর মার্টিন লুথার কিংয়ের মত তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছে অন্ধকারের শক্তি, কিন্তু ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলার শক্তি কারও নেই।”  

এফওএসডব্লিউএএল বলছে, বঙ্গবন্ধুর হারিয়ে যাওয়া জেলখানার ডায়েরি আর নোটবুক খুঁজে পাওয়ার পর তা প্রকাশিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার জীবনের এক নতুন অধ্যায় আলোয় এসেছে।

পুরস্কারের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, রাজনৈতিক ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে বই তিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি এ এমন এক মানুষের ভালোবাসা আর আবেগের বয়ান, যে মানুষটি ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছেন, তার দেশের মানুষকে পৌঁছে দিয়েছেন মুক্তির বন্দরে।

“অসাধারণ ওই সাহিত্যকর্মত্রয়ীর জন্য শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানাতে পেরে ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার গার্বিত।”  

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে রোববার শুরু হয়েছে এফওএসডব্লিউএএল-এর তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক সাহিত্য সম্মেলন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিপুল সংখ্যক লেখক ও সাহিত্যিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এ সম্মেলন উদ্বোধনের তাৎপর্য বর্ণনা করে অজিত কাউর এক বার্তায় বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় ঘটনামাত্র ছিল না।

“অনন্য এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বাঙালি জাতির পিতার দৃঢ় প্রত্যয় আর অনন্য সাহসিকতার মধ্য দিয়ে, যাকে ভালোবেসে ‘বঙ্গবন্ধু’ বলা হয়। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ভাষা রক্ষায় তিনি লড়াই করেছেন সিংহের মত। যে কোনো ব্যক্তির জীবনের চেয়েও একটি দেশের মর্যাদা রক্ষা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

এফওএসডব্লিউএএল-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, “বিশ্বজুড়ে মানুষ ভূমি ও আঞ্চলিক সীমানার অধিকারের জন্য, বিদেশি আগ্রাসন বা স্বৈরশাসকদের কাছ থেকে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ভিন্ন ও অনন্য, কারণ এটি ছিল ‘মানুষের স্পন্দিত চেতনা’র সুরক্ষার জন্য, যা কেবল নিজস্ব সংস্কৃতি এবং নিজস্ব ভাষায় স্পন্দিত এবং বিকশিত হতে পারে।”

অজিত কাউর বলেন, বঙ্গবন্ধু আর আমাদের মাঝে নেই, “তবে তিনি আমাদের জন্য তিনটি মূল্যবান ও মননশীল বই রেখে গেছেন। তাই এ মহামানবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, তাকে এফওএসডব্লিউএএল সাহিত্য উৎসবে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে এবার সেলিনা হোসেন, রামেন্দু মজুমদার, মহিদুল হক ও মোহিত কামাল এফওএসডব্লিউএএল আঞ্চলিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) শাবান মাহমুদ এবং হাই কমিশনের পক্ষে কনস্যুলার (রাজনৈতিক) সফিউল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।