মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় দায়িত্ব গ্রহণ করলেও পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে পারেনি এমআরটি পুলিশ।
Published : 30 Oct 2023, 07:43 AM
ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর নয় মাস পর কাজ শুরু করেছে এর নিরাপত্তায় গঠিত এমআরটি পুলিশ, যদিও স্বল্প লোকবল ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার অভাবে পুরোপুরি গুছিয়ে উঠেতে পারেনি পুলিশের এ বিশেষ ইউনিট।
ফলে এখন কেবল স্টেশনে যাত্রীদের নিরাপত্তা আর স্টেশন দেখভালের দায়িত্বই পালন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এমআরটি পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম।
গত ৯ অক্টোবর থেকে মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা পুলিশের নীল পোশাকই পরছেন তারা। শুধু জামার হাতের বাঁ দিকে এমআরটির লোগো আছে।
“এখন যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ দেখভাল এবং স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে, মামলা বা তদন্তের দায়িত্ব আমাদের নেই। ইউনিটের জন্য কোনো নির্ধারিত পতাকাও করা হয়নি, কাজ চলছে।”
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হয় মেট্রোরেল। এর সার্বিক নিরাপত্তায় চলতি বছরের ২৪ মে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ গঠনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় সরকার।
পুলিশের একজন উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে এমআরটি পুলিশ গঠন করা হয়। বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
পুলিশ সুপার শফিকুল বলেন, “প্রস্তাবিত ৫৩৭ জনের মধ্যে সরকার শুরুতে অনুমোদন দিয়েছে ২৩৮ জনকে। কিন্তু এত ‘স্বল্প জনবল’ দিয়ে কাজ করা সম্ভব নয় ভেবে ২৯৯ জনকে পুলিশ সদরদপ্তর প্রেষণে পাঠানো হয়েছে।”
অপরাধের ক্ষেত্রে কী হবে
রেলওয়ে পুলিশ নির্ধারিত এলাকায় কোনো অপরাধ হলে যেমন রেলওয়ে থানায় মামলা বা অভিযোগ জমা পড়ে, এমআরটি পুলিশের সেই সুযোগ এখনও তৈরি হয়নি।
“ফলে কোনো ফৌজদারি বা অন্য কোনো অপরাধ হলে অভিযোগকারীকে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় যেতে হবে বা কোনো অপরাধী গ্রেপ্তার হলে ওই থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমাদের মামলা গ্রহণ বা তদন্ত করার ক্ষমতা নেই”, বলেন শফিকুল ইসলাম।
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর ১২ দিন পার হলেও এমন অপরামূলক কর্মকাণ্ড নজরে আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিটি স্টেশনে একটি করে এমআরটি পুলিশ কন্ট্রোলরুম থাকবে, সেখানে গিয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারবেন।
“মেট্রোরেল পুলিশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বা স্বতন্ত্র ইউনিট হিসাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা থাকা দরকার। সেটাও এখনও হয়নি। কাজ চলছে।”
এখন যাত্রী আসা-যাওয়ার সময় এবং রাতে ফাঁকা স্টেশন দেখভালের দায়িত্ব পালন করছে এমআরটি পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, “মোট তিন শিফটে কাজ করা হবে। এর একটি সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যাত্রীদের আসা-যাওয়ার সময় দুই শিফটে এবং রাত ৮টার পর পরের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত একটি শিফট কাজ করবে।”
দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি স্টেশন রয়েছে মেট্রোরেলের। চালুর পর থেকে স্থানীয় থানা পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছিল। ৯ অক্টোবর থেকে ছয়টি স্টেশনের দায়িত্ব নিয়েছে এমআরটি পুলিশ। বাকি তিনটি স্টেশনের দায়িত্ব শিগগিরই তারা বুঝে নেবেন বলে জানান শফিকুল ইসলাম।
এছাড়া আগামী মাসের প্রথম দিকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হলে পর্যায়ক্রমে তখন সব স্টেশনের দায়িত্ব এমআরটি পুলিশ নেবে বলেও জানান তিনি।
এমআরটি পুলিশ পূর্ণতা পেলে কার্যপরিধিও বাড়বে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “বর্তমানে মেট্রোরেলের কার্যক্রম পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিচালিত হলেও তা অচিরেই দিয়াবাড়িতে স্থানান্তর হবে।”