‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নাই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

তার কাছে আপত্তিকর না ঠেকলেও বিষয়টির ব্যাখ্যা জানতে দিল্লিতে হাই কমিশনকে বলা হয়েছে, জানালেন শাহরিয়ার আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 05:01 PM
Updated : 5 June 2023, 05:01 PM

ভারতের নতুন সংসদ ভবনে স্থাপন করা ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র নিয়ে বিতর্কের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এই নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।

ওই মানচিত্রটিকে একটি স্থাপত্যকর্ম হিসেবেই দেখছেন তিনি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না।

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে নতুন পার্লামেন্ট ভবন গত ২৮ মে উদ্বোধন করেন প্রতিবেশী দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তারপরই সেই ভবনে মুরাল হিসেবে স্থাপিত আদি ভারতবর্ষের মানচিত্রটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ওঠে; কেননা, ওই মানচিত্রে বাংলাদেশকেও ভারতবর্ষে দেখানো রয়েছে।

‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে চরমভাবে অপমান করা হয়েছে উল্লেখ করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রোববার বিবৃতি দেয়। আরও ব্যক্তি ও সংগঠনও এ নিয়ে আপত্তি তোলে।

এনিয়ে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে শাহরিয়ার বলেন, “আমরা যেটা জেনেছি, আপনাদের কাছেও নিশ্চয়ই ইতোমধ্যে এসেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন যে, এটি অশোকান এম্পায়ার (মৌর্য সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্য)। এবং সেটি হলো যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৩০০ বছর আগে, সেই সময়ে যে অঞ্চলটি ছিল তার একটি ম্যাপ।

“যা-ই হোক, সেখানে এটা ম্যুরাল, এটা বাছাই করা হয়েছে, জার্নি বিভিন্ন সময়ের। সুতরাং এটা অতীতের, যেটাতে কালচারাল সিমিলারিটি থাকতে পারে। এটা রাজনীতি হবার মত কিছু নয়। যিশু খ্রিস্টের জন্মের ২০২৩ বছর পরের ম্যাপ এটি নয়। সুতরাং এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোনো কারণ নাই।”

এরপরও ভারত সরকারের কাছ থেকে বিষয়টির ব্যাখ্যা চাইতে নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “তবে, আমরা আরও ক্লারিফিকেশনের জন্য দিল্লিতে আমাদের মিশনকে বলেছি, তারা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে তাদের অফিসিয়াল ব্যাখ্যা যেটি, জানার জন্য। তবে, আমরা ওপেন সোর্স থেকে যেটা জেনেছি যে, সেটা বললাম।”

উদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “বিতর্কিত এই মানচিত্রে বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, আফগানিস্তানসহ প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি দেশকে ভারতের মানচিত্রের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা এই উপমহাদেশের ইতিহাসের ধারাবাহিক অর্জনের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অবহেলা।”

উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এবিষয়ে ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা চাইতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বানও জানান।