এক দশকে এটাই হবে পাকিস্তানের কোনো মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর।
Published : 24 Jul 2022, 08:24 PM
উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮ এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার। এক দশকে এটাই হবে পাকিস্তানের মন্ত্রিপরিষদের কোনো সদস্যের প্রথম ঢাকা সফর।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “বুধবার ঢাকায় ডি-৮ এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হবে।
“২০তম ওই সম্মেলন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন ডি-৮ এর বর্তমান সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবার ডি-৮ কমিশনের বৈঠক হবে ঢাকায়।”
বাংলাদেশ, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক ডি-৮ জোটের সদস্য।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি সম্মেলনে যোগ দেবেন জানালেও তিনি কবে ঢাকা পৌঁছাবেন তা জানাননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
হিনা রাব্বানি খার ছাড়াও ৭ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা তাদের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগ দেবেন উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, ইরান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদুল্লাহিয়ান।
মিশরের একজন সহকারী মন্ত্রী, ইন্দোনেশিয়ার একজন বিশেষ দূত, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও তুরস্কের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী সম্মেলনে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
ডি-৮ জোটের সদস্য হওয়ার জন্য আজারবাইজান আবেদন করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা সদস্যপদ পাবে কি-না, সে বিষয়ে ডি-৮ মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তানের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে সম্মেলনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানিকে পাঠাচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
এর আগে ২০১২ সালে ঢাকা সফর করেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার। ইসলামাবাদে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন তিনি।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারসহ বিভিন্ন টানাপোড়েনে গত ১০ বছরে পাকিস্তানের কোনো মন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেননি।
হিনা রাব্বানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে কি-না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “উনি দ্বিপাক্ষিক সফরে আসছেন না। উনি আসছেন ডি-৮ সম্মেলনে। সুতরাং আমরা ডি-৮ নিয়েই আলাপ করব। সে রকম কোনো শিডিউল এখনো আমার জানা নাই।”
এই বিষয়ে রাষ্ট্রাচার প্রধান (চিফ অব প্রটোকল) আমানুল হক বলেন, “এটা সবসময় এমনও না যে, আগে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া থাকে। ২৭ তারিখে পুরো সময়টাই ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন। এর বাইরে সময় আসলে খুব কম। রিকোয়েস্ট পেলে আমরা অ্যাকোমোডেট করব।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “বাণিজ্য, কৃষি, শিল্প (মাঝারি ও ক্ষদ্র শিল্প), পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এই ছয়টি ইস্যূ আসন্ন সম্মেলনে গুরুত্ব পাবে। যার মধ্যে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা বেশি গুরুত্ব পাবে।
“ইদানিং এনার্জি সিকিউরিটি সব সম্মেলনে আলোচিত হয়। মানুষজন এনার্জি সিকিউরিটিকে কীভাবে উন্নত করবে সেটার পথ খুঁজছে। আমাদের বক্তব্য থাকবে, আমরা আমাদের এনার্জি সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে চাই। অন্যান্য রাষ্ট্রও বোধহয় তা করবে। ইট ইজ এ হট টপিক।”
আট সদস্য দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করার বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “এই বছরে পিটিএ-র অনুমোদন হয়ে যাবে। এই বছরই কার্যক্রম শুরু করতে পারব আমরা।”