“বিদেশিরা যেখানেই মাতব্বরি করেছে, সেখানকার অবস্থা ভয়াবহ হয়েছে, এটা জেনেও বাংলাদেশের অনেকেই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন।”
Published : 26 Nov 2022, 01:37 PM
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশিদের হস্তক্ষেপে কোনো রাষ্ট্রের কল্যাণ হয় না।
শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের নানা বক্তব্যের মধ্যে মোমেন একথা বললেন।
তিনি বলেন, “কিছু কিছু লোক বিদেশিদের কাছে গিয়ে চান, তারা একটা চাপ দিক। এটা খুবই দুঃখজনক। তারা হস্তক্ষেপ করলে কোথাও ভালো ফল আসে না। বিদেশিরা কখনোই মঙ্গলের কাজে আসে না।”
উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানসহ কয়েকটি দেশের কথা বলেন তিনি।
“আমাদের অভিজ্ঞতা হল, বিদেশিরা যখন স্বদেশের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন সেই দেশের মঙ্গল হয় না। আফগানিস্তান কী কষ্টে আছে এই বিদেশিদের জ্বালায়। চিলিতে পিনোশে (চিলির স্বৈরশাসক) কি একটা পপুলার গভর্নমেন্ট ছিল, বিদেশিদের জ্বালায় সে ধ্বংস হয়ে গেল।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, বিএনপি দেশের বিষয়টি নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে।
অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিদেশি কূটনীতিকদের কথায় ফুটে উঠেছে।
মোমেন বলেন, “বিদেশিরা যেখানেই মাতব্বরি করেছে, সেখানকার অবস্থা ভয়াবহ হয়েছে, এটা জেনেও বাংলাদেশের অনেকেই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন।
“যেসব দেশের জনগণের সম্মান আছে, নেতৃত্বের সম্মান আছে, তারা বিদেশির কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে না। আমাদের অনেকেরই সম্মানবোধের ঘাটতি হয়েছে। তারা মনে করেন বিদেশিদের কাছে গেলেই ভালো। কিন্তু অভিজ্ঞতা অন্যরকম, সেখানেই বিদেশি এসেছেন, সেখানেই সমস্যা হয়েছে।”
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনও ভারতে গিয়ে তার এক বক্তব্যের জন্য একই রকম সমালোচনায় পড়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের পদ নিয়ে রিট খারিজ
তিনি বিদেশিদের কাছে ধরনা না দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ভোট চাইতে বিরোধীদের পরামর্শ দেন।
“বিদেশিদের কাছে মায়াকান্নার চাইতে উনারা যদি সাধারণ মানুষের কাছে যান, তাহলে তাদেরও মঙ্গল হবে, দেশেরও মঙ্গল হবে। আফটার অল এই দেশটা আমাদের সবার। এই দেশের অনিষ্ট আমরা হতে দিতে পারি না।”
বিদেশিদের কথায় সরকার চাপ অনুভব করছে না বলে বলেও জানান মোমেন।
যারা সরকারের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কী হবে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমেরিকাসহ অনেক দেশ এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবস্থা নেয়। আমাদের সেই সক্ষমতা নাই, এজন্য আমরা সেই পথে যাই না। তবে সময় হলে আমরাও অ্যাকশন নেব।”
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর নিয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা ২০২০ এ হওয়ার কথা ছিল। কোভিডের কারণে হয়নি। কোভিড এখনও আছে। দলবল গেলে…. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গেলে বড় দল যায়, সবার কোয়ারেন্টিন করতে হয়… এটা সম্ভব হবে না। এছাড়া তাদের সরকারের মধ্যেও একটু অসুবিধা চলছে। এ প্রেক্ষিতে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।”