“যে ভিসা নীতি আমরা ঘোষণা করেছি, সেটা বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকেই সমর্থন করে,” বলেন তিনি।
Published : 14 Oct 2023, 06:40 PM
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে আবারও উঠেছে বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দলের সমর্থনে বাংলাদেশের নির্বাচন ‘প্রভাবিত করতে চায় না’, বরং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া ‘একই’- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
গত মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। জানানো হয়, বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী’ ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত ২২ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে জানান, তার দেশ সেই ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়। এসব ব্যক্তির পাশাপাশি তাদের পরিবারের নিকটতম সদস্যরাও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হতে পারেন।
তবে, কতজন ব্যক্তি বা কাদের বিষয়ে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আগামীতে’ গণমাধ্যমও ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।
সেই প্রসঙ্গ ধরে সোমবার পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। তিনি বলেন, উগ্রপন্থি দলগুলো, যারা বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে ‘তালাবেন-মার্কা’ সরকার চায়, তারা রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। এরইমধ্যে গণমাধ্যমের ব্যক্তিদের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে, উগ্রবাদের সমালোচনা যারা করেন, সেই সাংবাদিকদের ‘তালিকা ছড়ানো হচ্ছে’।
ওই সাংবাদিক বলেন, সংবাদমাধ্যমের ওপর সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার যে কথা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাতে নাগরিক অধিকার কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, যুদ্ধাপরাধের বিরোধিতাকারী, সম্পাদক, সাংবাদিক, লেখক এবং সংখ্যালঘু অধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন, এটা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার চেতনার বিপরীত।
ম্যাথিউ মিলারকে ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, এ অবস্থায় রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যকে পররাষ্ট্র দপ্তর সমর্থন করেন কি না।
জবাবে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের আগের বক্তব্যকেই ঘুরিয়ে বলেন ম্যাথিউ মিলার।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশিরা যেটা চান, যুক্তরাষ্ট্র সেটাই চাইছে; আর তা হল অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন, যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে।
“বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম– সকলেই একই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে, যেন আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়, যেমনটা আমরাও চাই।”
ম্যাথিউ মিলার বলেন, “যে ভিসা নীতি আমরা ঘোষণা করেছি, সেটা বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকেই সমর্থন করে।
“যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না, ভোটের ফলকে প্রভাবিত করার কোনো ইচ্ছাও যুক্তরাষ্ট্রের নেই। বাংলাদেশের জনগণ যাতে স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচন করতে পারে, কেবল সেটা নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।”
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: