এক মামলায় বাবুলের জামিন, আরেক মামলায় ‘মুলতবি’

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা মামলায় বাবুলের জামিন আদেশ দুই মাসের জন্য ‘স্ট্যান্ডওভার’ রেখেছে হাই কোর্ট।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 11:21 AM
Updated : 4 June 2023, 11:21 AM

চট্টগ্রামের পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এই জামিন আদেশ দেয়।

তবে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বাবুলের জামিন আদেশ দুই মাসের জন্য ‘স্ট্যান্ডওভার’ (মুলতবি) রেখেছে হাই কোর্ট।

আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিসুর রহমান।

এর আগে পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমার দায়ের করা ওই মামলায় বাবুল আক্তারের বাবা আবদুল ওয়াদুদ ও ভাই হাবিবুর রহমান লাবু জামিন পেয়েছিলেন।

মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি তার স্বামী বাবুল আক্তার, তার বাবা মো. আবদুল ওয়াদুদ মিয়া, ভাই হাবিবুর রহমান লাবু এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের খুলশী থানায় মামলা করেন পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমা।

আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয় সেখানে।

একই অভিযোগে ২৭ সেপ্টেম্বর কারাগারে থাকা বাবুলসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় আরেকটি মামলা করেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

সেখানে বলা হয়, “বাবুল আক্তার, তার ভাই ও বাবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইন বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় গত ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে: খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ৪২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন।

“ওই ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রচার করা হয়।”

পিবিআই প্রধান তার মামলায় বলেছিলেন, “দেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি, বাংলাদেশ পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বিশেষ করে আমার মান-সম্মান ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে আসামিরা। যার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।”

মিতু হত্যা

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন মিতু। প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার।

হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিন পর ওই বছরের ২৪ জুন রাতে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুলকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। তার কিছু দিন পর পুলিশের চাকরিও ছেড়ে দেন তিনি।

তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে ২০২১ সালের মে মাসে ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। তখন বাবুলকে আসামি করে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

তবে আদালতের নির্দেশে সেই মামলার সমাপ্তি ঘটে এবং বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়। এ বছরের ৯ এপ্রিল প্রথম সাক্ষী মিতুর বাবা মোশাররফের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাবুলসহ সাত আসামির বিচার শুরু হয়।

বাবুল ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু।

কালুকে শুক্রবার গ্রেপ্তার হলেও মুছা এখনও পলাতক।

পুরনো খবর

Also Read: মিতু হত্যা: গ্রেপ্তার আসামি কালু কারাগারে

Also Read: মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারের বিচার চলবে

Also Read: চট্টগ্রামের ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় জামিন মেলেনি বাবুলের

Also Read: বাবুলের পরকীয়ার জেরে টাকা দিয়ে খুন, প্রথম সাক্ষ্যে অভিযোগ মিতুর বাবার

Also Read: বাবার সাক্ষ্যে মিতু হত্যা মামলার বিচার শুরু

Also Read: পিবিআই প্রধানের মামলায় বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র