ভারতের সমর্থন ছাড়া ৯ মাসে দেশ স্বাধীন হত না: মোজাম্মেল

“আমাদের দেশ কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যবহারের জন্য নয়,” বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2022, 03:47 PM
Updated : 11 Dec 2022, 03:47 PM

ভারতের সমর্থন না পেলে বাংলাদেশ ৯ মাসে স্বাধীনতা অর্জন করতে ‘পারত না’ বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। 

তিনি বলেছেন, “ভারত আমাদের শুধু বিশ্বস্ত প্রতিবেশী নয়, পরীক্ষিত প্রতিবেশী। ভারতীয় সমর্থন না পেলে আমরা কখনোই নয় মাসে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারতাম না। যে মূলনীতিগুলোর ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত, সেগুলোও ভারত যথাযথ সম্মান ও সাহায্য করে।” 

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে ‘ইন্ডিয়ান রিকগনিশন ম্যাটারস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। 

মোজাম্মেল হক বলেন, “১৯৭১ সালে শুধু আমেরিকা বা চীন আমাদের বিরোধিতা করেনি। মুসলিম দেশগুলোও চরম বিরোধিতা করেছিল, তারা ভণ্ড। আমাদের দেশে যেমন ধর্ম ব্যবসায়ী আছে, তারাও ধর্মের নামে ব্যবসা করে। 

“আমি ওসব দেশে গিয়ে বলেছি, তোমরা জেনোসাইড সমর্থন করে কীসের ইসলামের কথা বলো। আমি তুরস্কে গিয়ে বলেছি, সে দেশে যত মসজিদ আছে তার থেকে ঢাকায় আরও বেশি মসজিদ আছে। এজন্য এখন একটু থামছে।” 

ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশ কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যবহারের জন্য নয়। ওদের শেকড় অনেক গভীরে। সেজন্য আমাদের এখন সচেতন হতে হবে। 

“আমরাও মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় যেসব নাগরিক অবদান রেখেছেন, তাদের পরিবারের জন্য স্কলারশিপ চালু করেছি। আশা করছি, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুন্দর ও শক্তিশালী হবে।” 

ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, “বাংলাদেশ-ভারতের সর্ববৃহৎ সহযোগিতার ইতিহাস- আমাদের গৌরবের একাত্তর। মিত্রবাহিনী হিসেবে ভারতের অসংখ্য যোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ স্বাধীনের জন্য রক্ত দিয়েছেন। সেটিই আমাদের সম্পর্কের মূল শেকড়। 

“আর সেখান থেকে এখন আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায়, যা খুবই ইউনিক ও সমৃদ্ধ। আর আমাদের বোঝাপড়াও অনেক ভালো।” 

বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের বড় উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে প্রণয় বলেন, “নতুন নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের সহযোগিতার মাধ্যম আরও বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কে ভাবাবেগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি  জড়িয়ে আছে। দিনে দিনে আমাদের দুই দেশের সামাজিক বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী হচ্ছে। 

“অর্থনৈতিকভাবেও দুই দেশের বিভিন্ন কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উন্নয়ন হচ্ছে। দুই দেশের আন্তর্জাতিক এজেন্ডা প্রায় এক। ফলে আমাদের পথটাও প্রায় এক এবং আমার একসঙ্গে কাজ করতে পারছি। আশা করি এগুলো আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও উচ্চতায় নিতে দুই দেশ কাজ করে যাচ্ছে।” 

বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দীন আহমেদ। বক্তৃতা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার,

ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইদুর রহমান সজল। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব নারায়ণ সাহা মনি।