বক্তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে শাস্তির দাবি জানান।
Published : 29 Oct 2023, 03:50 PM
রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাকে ‘নজিরবিহীন’ উল্লেখ করে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার তাগিদ দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
রোববার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সভায় সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সাবেক সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মেহেদী, বার কাউন্সিল সদস্য সাইদ আহমেদ রাজা, রবিউল আলম বদুসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা বক্তব্য রাখেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, “প্রধান বিচারপতি সংবিধানের কাস্টডিয়ান। তার বাসভবনে হামলার ঘটনা নজিরবিহীন। এ জন্য দায়ীদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।”
সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। সাংবাদিকরাও বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন।
“কিন্তু বিরোধীদল কর্তৃক কখনও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। এবার তারা সেটা করে দেখাল।”
নয়া পল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা থাকলেও শনিবার বেলা ১১টার পর উত্তেজনা ছড়ায় কাকরাইল মসজিদের সামনে। ওই পথে বায়তুল মোকাররমের সমাবেশমুখী আওয়ামী লীগের কর্মীদের বহনকারী একটি বাসে ইটপাটকেল ছোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এক সময়ে বেঁধে যায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ।
যা পরে ওই এলাকায় একের পর এক সংঘাতের সূত্রপাত ঘটায়। এরপর দুপুর ১টার দিকে সংঘর্ষ কাকরাইল থেকে বিএনপির সমাবেশের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে কাকরাইল, শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
সংঘর্ষের মধ্যে কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়। হামলা হয় পল্টনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।
সহিংসতায় নিহত হয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ; সংঘাতে প্রাণ গেছে যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার।
এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অনেকেই। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অন্তত ৪১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। বিএনপির দাবি, পুলিশের হামলায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
অ্যাডভোকেট সাইদ আহমেদ রাজা বলেন, “এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের অফিসে হামলা করেছে; বার কাউন্সিলে হামলা করেছে। ওইসব হামলার বিচার না হওয়ায় তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করার সাহস পেয়েছে।”
সভায় বক্তাদের ভাষ্য, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ‘দেশদ্রোহিতার’ পর্যায়ে পড়ে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়।
সাধারণ মানুষ প্রধান বিচারপতির বাসভবন চেনেন না মন্তব্য করে আইনজীবীরা বলেছেন, কেউ তাদেরকে বাসভাবন চিনিয়ে দিয়েছে এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।
সভা শেষে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের ব্যানারে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন আইনজীবীরা।