বইমেলার শিশুপ্রহরে শিশুতোষ বইয়ের দোকানে বিক্রিও হয়েছে ভালো।
Published : 03 Feb 2023, 03:32 PM
অমর একুশে বইমেলার শিশু প্রহরে বাবার সঙ্গে স্টলে স্টলে ঘুরে বই দেখছিল তাজরিহান ও সেহরিজ, পছন্দের বই কেনার পর সিসিমপুর মুক্তমঞ্চে জমল তাদের নাচ, গান আর খেলা।
তাদের বাবা শিহাব উদ্দিন বললেন, “শিশুদের জন্য সুন্দর আয়োজন শিশু প্রহর। আমার মেয়েরা খুব আনন্দ পাচ্ছে। অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলাও করছে। কয়েকটা স্টলে ঘুরেছি, ওরা বইও কিনেছে।”
এবারের বইমেলায় প্রথম শিশু প্রহর শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল ১১টায়; বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা শিশু চত্বরে শিশু প্রহর উদ্বোধন করেন।
মাসব্যাপী এ মেলায় সপ্তাহের দুদিন শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে শিশুদের জন্য, এই সময়টাকে ঘোষণা করা হয় শিশু প্রহর হিসেবে।
ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার সকালেই মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে মেলায় ভিড় করে শিশুরা। ছয় বছরের নাহিয়ান নূরও তার বাবার সঙ্গে এসেছিল বইমেলার উৎসবে যোগ দিতে।
নাহিয়ানের পছন্দ সিসিমপুর, তাই মেলায় ঢুকেই শিশু চত্বরে সিসিমপুর স্টলে তাকে নিয়ে যান বাবা নাজমুল আলম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যেহেতু ছুটির দিন, ভিড় হবে জানি। এজন্য সকাল সকাল চলে আসছি। আমার ছেলে সিসিমপুরের বইগুলো পছন্দ করে। বাসায় অনুষ্ঠানগুলো দেখে, সিসিমপুরের স্টল থেকে বই কিনেছি।”
সিসিমপুর স্টলের ইয়াসিন আরাফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্র ও শনিবার আমাদের একটু বেশি বিক্রি হয়, সে হিসেবে আজ প্রথম ছুটির দিনে আমাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমাদের নতুন নয়টি বই এসেছে। এর মধ্যে ইকরির ইচ্ছেঘুরি, বার বার করি ব্যবহার এবং এসো রঙধনু বানাই এই তিনটি বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।”
শিশুসাহিত্য বইঘর স্টলের বিক্রয়কর্মী হুজাইফা বলেন, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মেলার তৃতীয় দিনই আমাদের স্টলে ভালো বিক্রি হচ্ছে। মূলত বিভিন্ন ছবি আঁকার বইয়ে শিশুদের আগ্রহ বেশি।”
বইমেলায় শিশুচত্বরটি এবার বাংলা একাডেমির মন্দিরের পাশের গেইট দিয়ে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। শিশু চত্বরে এবার ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে ১১১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি বছরের মত এবারও শিশুপ্রহর মেলায় আসা শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন সাজিয়েছে। শিশু চত্বরটিও করা করা হয়েছে একটু বড় পরিসরে। সব মিলিয়ে শিশু চত্বরে এসে শিশু-কিশোরেরা তাদের প্রিয় বই কেনার পাশাপাশি আনন্দে মেতে উঠবে।”
তিনবছর পর ভাষার মাসের প্রথম দিনেই এবার পর্দা উঠেছে বইমেলার। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে বইমেলা।
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল ৮টায় খুলবে মেলার দুয়ার, খোলা থাকবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে।
অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এছাড়া নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রয়েছে।