এবারের বইমেলায় এ নিয়ে মোট ১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করল বইমেলা পরিচালনা কমিটি।
Published : 19 Feb 2024, 11:42 AM
আরও সাতটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি।
মেলায় গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রোববার এ চিঠি দেওয়া হয়।
এই সাত প্রতিষ্ঠান হল- দোয়েল প্রকাশনী (স্টল নং ৪৪৫,৪৪৬,৪৪৭), ছোটদের জ্ঞান বিজ্ঞান একাডেমি (স্টল নং ৭৫৯), প্রিয় প্রকাশ (স্টল নং ৭৬৩), গোল্ডেন বুকস (স্টল নং ৭৬৩), সাত ভাই চম্পা (স্টল নং ৭০৯-৭১০), ডাংগুলি (স্টল নং ৭২১), লাইট অফ হোপ (স্টল নং ৭২১)।
এবারের বইমেলায় এ নিয়ে মোট ১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করল বইমেলা পরিচালনা কমিটি। এর আগে দুই দফায় যে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়েছিল, তাদের সবাই চিঠির জবাব দিয়েছে।
তবে তাদের বিরুদ্ধে মেলা চলাকালে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম।
নতুন করে সতর্ক করা সাতটি স্টলের বিরুদ্ধে কী ধরনে অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে সোমবার সকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মেলায় গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি এসব স্টলে নীতিমালা লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে। তার প্রেক্ষিতে মেলা পরিচালনা কমিটি সতর্ক করে এ চিঠি দিয়েছে।"
বইমেলার নীতিমালায় বলা আছে, "বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকগণ গাইড ও গাইড জাতীয় এবং পাইরেটকৃত বই সংরক্ষণ, প্রদর্শন বা বিক্রয় করিতে পারিবেন না।"
"এই ধরনের কোনো বই কোনো স্টলে পাওয়া গেলে উক্ত স্টল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করিয়া দেওয়া হইবে এবং ওই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে উক্ত বৎসর এবং পরবর্তী এক বৎসরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা হইবে।"
এর আগে যাদের সতর্ক করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, "এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বইমেলার পর আমাদের যে সভা আছে, তখন এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
এর আগে যে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে মেলা কমিটি, সেগুলো হল– গাজী প্রকাশন (স্টল ৩৭৪-৩৭৫), বঙ্গজ প্রকাশন, (স্টল ৪০৭), কুঁড়েঘর প্রকাশনী (স্টল ৪০৩-৪০৪), তৃপ্তি প্রকাশ কুটির (স্টল ৩৭৬-৩৭৭), বাতিঘর প্রকাশনী (৪৫৫-৪৫৬), রাবেয়া বুকস (স্টল নং- ১৬১-১৬২), সম্প্রীতি প্রকাশ (স্টল নং- ১৬৮), মাইক্রোটেক পাবলিকেশন্স (স্টল নং- ১৬৯), মাহী প্রকাশনী (স্টল নং- ৩৪৯), বাংলাদেশ পাবলিশার্স (স্টল নং- ৭৫৪), সুপ্ত পাবলিকেশন্স (স্টল নং- ৭৫৩), কিংবদন্তী পাবলিকেশন (স্টল নং- ৫৩৪-৫৩৫)।
মেলায় গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেসব প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাদের স্টলে আইএসবিএন ছাড়া বই, পাইরেটেড বই, অন্য প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া বই মিলেছে।
কমিটির কার্যাবলীতে মূলত নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়ে সুপারিশ করার এখতিয়ার রয়েছে। তারা মেলা পরিচালনা কমিটিকে লিখিত আকারে সুপারিশ জানিয়েছে। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার কেবল মেলা পরিচালনা কমিটির।
জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক জাতি গঠনের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিবছর আয়োজিত একুশে বইমেলা মূলত সৃজনশীল বা মননশীল বইয়ের উৎসব, এখানে গাইড বই কিংবা নেটবই-পাইরেটেড বই বিক্রি করার বিধান রাখা হয়নি নীতিমালায়।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "পাইরেটেড বইয়ের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স থাকা উচিত। নীতিমালা লঙ্ঘনের প্রমাণ থাকলে তা নিয়ে মেলা পরিচালনা কমিটির কঠোর হওয়া উচিত।"