আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনের দাবিও তোলা হয়েছে।
Published : 16 Aug 2024, 07:29 PM
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সমতলের আদিবাসীদের তরফে একজন প্রতিনিধি রাখার দাবি উঠেছে।
শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে এই দাবি তোলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ।
সমাবেশের আগে সমতলের আদিবাসী ছাত্র-যুব ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ‘কালচারাল শোডাউন’ করা হয়।
সমাবেশে অলিক মৃ বলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকারে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আমাদের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। আমরা সমতলের আদিবাসীরা সব সময় বঞ্চিত, অবহেলিত। আমাদের প্রতিনিধি রাখা দরকার।
“এখনও সময় আছে, যেহেতু আজকে চারজন উপদ্ষ্টো শপথ নিয়েছেন; সুতরাং আমরা মনে করি, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে সমতল থেকে একজন প্রতিনিধি যেন রাখা হয়।“
তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে আদিবাসীদের সঙ্গে সংলাপ, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনের দাবি তোলেন।
অলিক মৃ বলেন, “স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা সমতলের আদিবাসীরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এখন যে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমরা যারা আদিবাসীরা বঞ্চিত-শোষিত, তাদের অধিকারের বিষয়টি যাতে দেখা হয়।
“আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন ও মন্ত্রাণালয় গঠনের দাবি করে আসছি। আামাদের আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভূমি সমস্যা। কিন্তু বিগত সরকার কেউ আমাদের কথা দিয়ে কথা রাখেনি। আমাদের বিশ্বাস ও আশ্বাস রয়েছে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেকে আদিবাসীবান্ধব। আমরা মনে করি, তারা আমাদের কথা রাখবেন।”
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি অলিউর সান বলেন, “আমরা বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র কায়েম করেছি। সকল মানুষের জন্য একটি বহুজাতির রাষ্ট্র গঠন করতে পারিনি। আমাদের সামনে এখন সুযোগ এসেছে এই রাষ্ট্রকে নতুন করে গঠন করবার।
“সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় আদিবাসীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। শিক্ষানীতি থেকে শুরু করে প্রতিটি নীতিতে আদিবাসীদের প্রাধান্য দিতে হবে।”
লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, “অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অনেকে আদিবাসী শব্দটি উচ্চারণ করছেন। আদিবাসীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আমরা আশা করি, রাষ্ট্র সংস্কার হলে সংবিধানে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।”
আদিবাসী ফোরামের ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল আজিম বলেন, “আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অনিয়ম, আমরা আশা করি এই সরকার সেগুলো সংস্কার করবে। এই রাষ্ট্রে আমরা দীর্ঘদিন ধরে শোষিত ও বঞ্চিত। আমরা আশা করি, এখানে আমাদের যুক্ত করা হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই।“
সমাবেশ থেকে আগামী শুক্রবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক সমাজ, আইনজীবী ও সাংবাকিদের নিয়ে সংহতি সমাবেশের আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।