Published : 30 Apr 2025, 12:54 PM
দুই যুগ আগে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়ে ১০ জনকে হত্যার ঘটনায় জজ আদালতের দেওয়া রায় হাই কোর্টে বহাল থাকবে কি না, তা জানা যাবে আগামী ৮ মে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাই কোর্ট বেঞ্চ সেদিন এ মামলার রায় ঘোষণা করবে।
জজ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন ( ডেথ রেফারেন্স) এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিল।
বুধবার বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকায় উঠলে আদালত রায় ঘোষণার জন্য তারিখ ধার্য করে দেয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান।
২০০১ সালে রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা; তাতে ১০ জনের প্রাণ যায়। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলে আঘাত হানতে মৌলবাদী গোষ্ঠী সেই হামলা চালিয়েছিল বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।
হামলার পর ওই দিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। দুই মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়।
ঘটনার প্রায় আট বছর পর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ঢাকার দায়রা জজ রুহুল আমিন ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলার রায়ে প্রধান আসামি মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।
মুফতি হান্নান ছাড়াও আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহেরকে।
সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফলে রমনা বটমূলের বিস্ফোরক আইনের মামলা থেকে তার নাম বাদ যায়।
কারাগারে থাকা আসামিরা পরে খালাস চেয়ে উচ্চ আদালত আপিল করেন। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি হাই কোর্টে আসে।
বেশ কয়েকটি বেঞ্চ ঘুরে চলতি বছর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিদের শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখে হাই কোর্ট।