চলে এল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউরেনিয়াম

“এই জ্বালানি ঢাকা থেকে রূপপুরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী,” বলেন পিডি শৌকত আকবর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2023, 10:26 AM
Updated : 7 Nov 2023, 10:26 AM

নির্মাণধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের চালান বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম জ্বালানিবাহী একটি বিশেষ বিমান ঢাকায় অবতরণ করে বলে জানিয়েছেন রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর।

সন্ধ্যায় তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ রাশিয়া থেকে একটি চার্টার্ড বিমানে ঢাকায় পারমাণবিক জ্বালানি পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হল।

“আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার মাধ্যমে ইউরেনিয়াম জ্বালানিগুলো প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমরা সংবাদ সম্মেলন করে প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সবাইকে জানাব।”

এই জ্বালানি রূপপুরে কীভাবে পৌঁছবে- এই প্রশ্নে পরমাণু বিজ্ঞানী শৌকত আকবর বলেন, “এই জ্বালানি পরিবহনে নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। তাই এটা এখন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

“তারাই ঢাকা থেকে রূপপুরে তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এই জ্বালানি পরিবহনের সময় কাউকে জানানো হবে না।”

আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই জ্বালানি হস্তান্তরের কথা আছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের, রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে।

এই পর্যায়ে এসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট এখন প্রায় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত। তবে এর সঙ্গে অনেক আনুসাঙ্গিক বিষয় থাকায় হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে উৎপাদনে যেতে।

পাবনার রূপপুরে দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকায় এই কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি করেছে। বাংলাদেশে একক প্রকল্প হিসেবে এটি সবচেয়ে বড় কোনো অবকাঠামো প্রকল্প। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীসহ নানা জটিলতায় কাজ পিছিয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ডিসেম্বরে জানিয়েছেন ২০২৪ সালের শেষের দিকে এই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসতে পারে।

প্রকল্পটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এফ এম মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী এক বছরের মধ্যে প্রকল্পটির প্রথম ইউনিটের মাধ্যমে ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে নিয়ে আসার জন্য আমরা কাজ করছি।”

(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)