“আগামীকাল জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছাবে এবং বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
Published : 23 Apr 2024, 09:50 PM
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে দেশের পথে রওনা হয়েছেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি।
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গনে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাখাইনে সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমার প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যদের ফেরত নিতে যে জাহাজ পাঠানো হবে, সেটিতে করেই বাংলাদেশিরা ফিরছেন।
দূতাবাস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে সিতোয়ে বন্দর থেকে মিয়ানমারের নৌ জাহাজ চিন ডুইনে করে রওনা হয়েছেন তারা।
“আগামীকাল জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছাবে এবং বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
এই বাংলাদেশিদের নামিয়ে মিয়ানমারের জাহাজটি ২৫ এপ্রিল নিজ দেশের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের নিয়ে যাবে, তা আগেই জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সর্বশেষ হিসাবে মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ২৮৫ জন সদস্য রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।
মঙ্গলবার দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফেরার পথে থাকা ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা; ৩০ জন বান্দরবান, সাত জন রাঙামাটি এবং একজন করে খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার বাসিন্দা রয়েছেন।
এই নাগরিকদের ফেরানোর প্রক্রিয়া তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইয়াঙ্গনের বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারের জাহাজটির বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে।
“সর্বোচ্চ সংখ্যক যাচাইকৃত বাংলাদেশি নাগরিককে দ্রুত ও সহজে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনায় দূতাবাস মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত ১৪৪ জন ‘যাচাইকৃত বাংলাদেশি নাগরিক যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন’ তাদেরকে সিতোয়ে কারাগারে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করে।”
২৯ জনের সাজা মওকুফ করে দেশে ফেরানোর কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “২৯ জন যাচাইকৃত বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনো কারাভোগরত কিংবা বিচারাধীন, একইসাথে তাদেরকেও মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি স্বাগতিক দেশের কাছে তুলে ধরে, যার ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরকেও দেশে পাঠানো হয়।”
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।
তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় মোট ২৮৫ জন এসেছেন বাংলাদেশে, যাদের মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও সেনা সদস্য রয়েছেন।