চিঠিতে তাদেরকে আগামী ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি হাজির হতে বলা হয়েছে।
Published : 18 Feb 2025, 12:01 AM
বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ছেলে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের আগামী ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস এবং অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর অংশ হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম ও ব্যাংকের ১১ কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে সোমবার দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ চিঠি দিয়েছেন। কমিশনে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ চিঠি পাঠানোর তথ্য দিলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাননি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মোনিকো ফার্মা লিমিটেডের অনুকূলে ১০০ কোটি টাকা ঋণ বা বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং টিআইএনসহ প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সঙ্গে আনতে বলা হয়েছে।
এস আলমের ছেলে ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম, ঢাকা সেন্ট্রাল জোনের এসভিপি মো. নাজমুল হুদা সিরাজী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট দিলরুবা হায়াত, এফএভিপি মো. আবু হানিফ, এসপিও শরিফুল ইসলাম এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু সাঈদ মোহাম্মদ কাশেমকে ২৬ ফেব্রুয়ারি তলব করা হয়েছে।
অপরদিকে নির্বাহী কমিটির সদস্য জামাল মোস্তফা চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. সারওয়ার হোসেন, ইভিপি মো. শামসুদ্দোহা ও মীর রহমত উল্লাহ, এসইভিপি আবু সাঈদ মো. ইদ্রিস ও ডিএমডি কাজী মো. রেজাউল করিমকে তলব করা হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মনিরুল মওলাসহ ২৫ জনকে গত ৫, ৬ ও ৯ ফেব্রুয়ারি তিনটি পৃথক তারিখে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
সরকার পতনের আগে ও পরে নানা কারণে আলোচিত ব্যবসায়িক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলমের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের বিষয়টি সামনে আসে ২০২৩ সালের অগাস্টে। তখন এ বিষয়ে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হলেও তা আর এগোয়নি।
দুদকের কর্মকর্তারা বলেন, অনুসন্ধান শুরুর পর সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে তা থেকে সরে আসে দুদক। ওই বছরের ২৪ অগাস্ট এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও দুদকের অনুসন্ধান সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে হাই কোর্ট।
এরপর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান নিয়ে পাঁচ মাস আগে হাই কোর্টের দেওয়া স্বপ্রণোদিত রুল খারিজ করে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের ওই আদেশের কপি পাওয়ার পর দুদক কর্মকর্তারা বলেন, এতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়।
২০১৭ সালে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
পরে সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলমকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ঋণের নামে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়, যার বেশির ভাগই ঋণ হিসেবে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে।
৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলে পর এস আলম গ্রুপের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধানে গতি পায়।
এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এস আলমের ছেলে ও ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে।
পুরোনো খবর
এস আলমের ছেলের বিরুদ্ধে দুদকে আরেক মামলার অনুমোদন
'ঋণ জালিয়াতি': এস আলমের ছেলেসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা