২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১১ বছর বয়সী শিল্পীকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর সে মারা যায়।
Published : 14 May 2024, 06:35 PM
রাজধানীর কমলাপুরে দেড় যুগ আগে এক শিশু গৃহকর্মীকে হত্যার দায়ে এক দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রেল কর্মী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তারকে যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামিরা। সাজা পরোয়ানা দিয়ে পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শিল্পী বেগম নামের ১১ বছর বয়সী ওই গৃহকর্মী উত্তর কমলাপুর কবি জসিম উদ্দিন রোডে নজরুল ইসলামের বাসায় কাজ করত। ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তার মাকে ফোন করে জানানো হয়, তার মেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
সেই খবর পাওয়ার পর তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান, তার মেয়ে গুরুতর জখম হয়েছে। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী শিল্পীকে ঘরের দরজা আটকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটায়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শিল্পীকে তারা মারধর করতেন।
ঘটনার তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিল্পী। এরপর তার বাবা সিরাজুল ইসলাম মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই বছর ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মতিঝিল থানার এসআই গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। পরের বছরের ২৬ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
বিচার চলাকালে ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয়জনের সাক্ষ্য শুনে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করল আদালত।
এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শওকত আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বাদী তার সাক্ষ্যে বলেছিলেন, তার মেয়ে (শিল্পী) বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যায়। কিন্তু ওই সাক্ষ্য ধোপে টেকেনি। তাদের দারিদ্র্যের সুযোগে দণ্ডিতরা হত্যা মামলায় বাদীকে টাকা দিয়ে আপস করতে চেয়েছিলেন। সারকামসটেনশিয়াল এভিডেন্স ধরে রায় দেওয়া হয়েছে।
“এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মাজের মা নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন। ঘটনার সময় শিল্পী ও তিনি ছাড়া বাসায় কেউ ছিলেন না। কিন্তু তার সাক্ষ্য নেওয়া যায়নি। আমি একটি আবেদনে বলেছিলাম, এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তলব করা উচিৎ, কিন্তু আদালত তা নাকচ করে দেয়।”