শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে রোববার সকাল ১০টা থেকে ১০টা ১ মিনিট রাজধানীতে ‘১ মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি পালন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
Published : 15 Oct 2023, 11:22 AM
শব্দ দূষণ বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীতে যেভাবে এক মিনিট নীরবতার কর্মসূচি পালন করা হয়েছে, ধীরে ধীরে তা সারা দেশে বিস্তৃত করার কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন।
পর্যায়ক্রমে এক ঘণ্টা, পাঁচ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল শব্দ দূষণমুক্ত করার পর তা ২৪ ঘণ্টায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে রোববার সকাল ১০টা থেকে ১০টা ১ মিনিট রাজধানীতে ‘১ মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি পালন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে, শাহবাগ মোড়, উত্তরা, বিজয় সরণী মোড়, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, গাবতলী, মগবাজার, মহাখালী, গুলশান-১, কমলাপুর, বৌদ্ধ মন্দির এবং যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় সামনে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে লিফলেট বিলি করেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “আজ শুধু ঢাকা শহরে এক মিনিট শব্দ দূষণমুক্ত কর্মসূচি পালন করলাম। কিছু দিনের মধ্যে সারা দেশব্যাপী এটা করব।
“সারা দেশকে শব্দ দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশের মানুষ শব্দ দূষণমুক্ত করতে এগিয়ে আসবে।”
সারা দেশকে শব্দ দূষণমুক্ত করতে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, “বিনয়ের সঙ্গে সকলকে অনুরোধ করব, আপনারা বিষয়টি একটু নীরবে চিন্তা করে দেখেন আপনার একটা হর্নের কারণে একজন মানুষের জীবনে যে কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে, হার্ট অ্যাটাক করতে পারে বা ছোট ছোট বাচ্চারা আক্রান্ত হতে পারে। হার্ড্রলিক হর্ন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।”
মন্ত্রী বলেন, “আপনারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন, এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশাবাদী, এই বাংলাদেশকে আমরা একদিন শব্দ দূষণমুক্ত করতে পারব।
“অন্য দেশে যখন যাই, আমরা শব্দ দূষণ মেনে চলি। কিন্তু নিজের স্বাধীন দেশে এসে আমরা সেটা মানি না। আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি।”
সারা দেশ এক সময় ২৪ ঘণ্টাই শব্দ দূষণমুক্ত থাকবে– সেই আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “সারা পৃথিবীর মানুষ মানে, কেন আমরা পারব না? ইনশাআল্লাহ আমরাও পারব। একটু সচেতন হলে দেশকেও দূষণমুক্ত রাখতে পারব।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ জানান, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এ সংক্রান্ত বিধিমালা হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিধিমালা হালনাগাদ করা হবে।
বিধিমালা হালনাগাদ করে শব্দের মানমাত্রা পুননির্ধারণ করে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চলতে হলে কত ডেসিবেলের সাইরেন তারা সড়কে বাজাতে পারবে, রোগী নেওয়ার সময় বাজাতে পারবে, কিন্তু রোগী না থাকলে পারবে কিনা- এসব নির্দেশনা দেওয়া হবে।
“যারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন, তাদের জন্য আলাদা মানমাত্রা থাকবে। কনসার্ট হলে, পাবলিক প্লেসে জনসমাগম হলে সেখানে কত মানমাত্রার শব্দ ব্যবহার করতে পারবে তা বলে দেওয়া হবে। শাস্তি, জরিমানা, জেল সবাই থাকবে।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, পুলিশ এবং স্কাউটের সদস্যরা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনের কর্মসূচিতে অংশ নেন।