“এটা বাংলাদেশের উপকার করবে না, ভারতেরও উপকার করবে না। যারা উগ্রতা চায় তাদের জন্য বরং সহায়ক হবে”, বলেন তিনি।
Published : 01 Dec 2024, 11:34 PM
বাংলাদেশকে নিয়ে শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বে ‘সংঘবদ্ধ অপপ্রচারের’ অভিযোগ এনে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, এটি বাংলাদেশ বা ভারত- কারও জন্য ভালো হবে না। যারা উগ্রতা চায়, তাদের জন্যই ‘সহায়ক’ হবে।
রোববার ঢাকায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গত সপ্তাহ বা এই সময়টা ‘খুব গুরুতর সমস্যা ছিল’ মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, “গণমাধ্যম, বিশেষ করে ভারতীয় গণমাধ্যম এখানে হওয়া বিপ্লব নিয়ে খুব অখুশি হয়েছে। এটা এখন কেবল ভারত নয়, পুরো বিশ্বে অনেকটা ‘সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে’ রূপ নিয়েছে। এটা প্রমাণ করার জন্য যে, বাংলাদেশ এমন দেশ হয়ে গেছে যেখানে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয় এবং যেন ‘তালেবানের মত’ সরকার আসছে প্রভৃতি।”
এমন অপপ্রচারকে ‘খুবই অন্যায্য’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মনে করে যে, কোনো অপরাধ ছাড়াই ‘বলি’ বানানো হচ্ছে। এর খারাপ দিক হচ্ছে, এমন বাজে নিন্দা যদি চলতে থাকে, তাহলে মনোভাব কঠিন হতে থাকবে।
“এটা কোনো পক্ষের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। যেসব মানুষ যৌক্তিক ও বোধসম্পন্ন তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ পাবে না, যারা উগ্রতা চায় তাদের জন্য বরং সহায়ক হবে। এটা কারও ভালো করবে না। এটা বাংলাদেশের উপকার করবে না, ভারতেরও উপকার করবে না।”
ব্র্যাক সেন্টারে ইনে দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠানমালার ‘ইনফ্লুয়েন্সিং দ্যা রিজিওনাল অ্যান্ড গ্লোবাল ডিসকোর্স’ শীর্ষক সেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের সঙ্গে 'স্বাভাবিক', ভারতের সঙ্গে 'জনকেন্দ্রিক' সম্পর্ক
তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) কার্যকর করা কঠিন। এছাড়া বিবিআইএন তো আজকের ধারণা নয়, অনেক আগের, তবে কিছুই হয়নি।
“বরং এটি কার্যকর করা সবচেয়ে সহজ ছিল। কারণ, এর প্রতিটি সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল, নিজেদের মধ্যে তেমন কোনো সংকট ছিল না।”
বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোর করতে না পারার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “রেল বা সড়ক যে অবকাঠামোই বলেন না কেন এটি হার্ডওয়্যার। আর হার্ডওয়্যার কখনই সফটওয়্যার ছাড়া চলে না। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের কাছে কি সফটওয়্যার রয়েছে?
“বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি সফটওয়্যারটি দেখছি না। এখন আমাদের প্রয়োজন আলোচনা, বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। প্রায় ১৫ বছর আগে বিসিআইএমের ‘কার র্যালি’ হয়েছিল, এরপর আর কিছু দেখা যায়নি।”
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় ভারতের সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও রাষ্ট্রদূত শ্রীধর ক্ষত্রি, রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফল ডেভেলপিং কান্ট্রিজের মহাপরিচালক সচীন চতুর্বেদি, ইউনান একাডেমি অব সোশ্যাল সাইন্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট রেন জিয়া, ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের পরিচালক ড্রিক উইলেম এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান বক্তব্য দেন।