খোকন খেদ প্রকাশ করে বলেন, “(অধ্যাদেশে) সুপ্রিম কোর্ট (আইনজীবী সমিতি) ও বার কাউন্সিলের কোনো প্রতিনিধি রাখা হলো না।”
Published : 11 Mar 2025, 03:33 PM
সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলে’ আইনজীবী প্রতিনিধি রাখার দাবি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সংবাদ করে এ দাবি জানান সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
সুপ্রিম কোর্টে স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারক নিয়োগের বিধান রেখে গত ২১ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই ও সুপারিশ করার জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে, যার নাম হবে ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’। প্রধান বিচারপতি হবেন সাত সদস্যের এই কাউন্সিলের চেয়ারপারসন।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এই কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আপিল বিভাগে কর্মরত প্রবীণতম বিচারক, হাই কোর্ট বিভাগে কর্মরত প্রবীণতম বিচারক, বিচার-কর্ম বিভাগ থেকে নিযুক্ত হাই কোর্ট বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক, চেয়ারপারসনের মনোনীত আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং চেয়ারপারসনের মনোনীত আইনের একজন অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এই কাউন্সিলের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিচারক নিয়োগের আইন করার যখন প্রস্তুতি চলছিল, তখন আইনজীবীদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল।
“কিন্ত হঠাৎ করে যে আইনটা করেছে, সেটা ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম যে একটি বৈষম্যবিরোধী আইন করা হবে। কিন্তু বৈষম্যমূলক আইন হয়েছে। (হাই কোর্টে) শেষ নিয়োগে দেখা গেছে অনেকেই কোর্টে আসেননি বা ১২/১৪ বছরে তেমন মামলাও করেননি; বিচারপতি হয়ে গেছেন। এটা কাম্য নয়।
“আমরা বলেছিলাম যে- সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনকে বা বার কাউন্সিলকে যদি ইনভল্ভ করা হয়, তাহলে আমরা দেখাতে পারব যে- সে আসলে প্র্যাকটিস করে কি না; এবং সেটাই আলোচনায় এসেছিল।”
খোকন বলেন, “(অধস্তন আদালতে কর্মরত) বিচারকরাও কিন্তু একটা দাবি জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি বরাবর। তারা ৭০ শতাংশ দাবি করেন। তারা দাবি কীভাবে জানাবেন? সিবিএ নাকি তারা? তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী; আমরা সেটার প্রতিবাদ করেছি। তারা এটা করতে পারেন না।
“কিন্তু আইন করার সময় দেখা গেল- ঠিকই তাদের বক্তব্যই সঠিক হলো। আইনজীবীদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। পাশাপাশি বিচারকদের একজন প্রতিনিধি আছেন, তিনি বিচারক থেকে নিয়োজিত হাই কোর্ট বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক; এটা কী করলেন আপনি? সুপ্রিম কোর্ট (আইনজীবী সমিতি) ও বার কাউন্সিলের কোনো প্রতিনিধি রাখা হলো না। আমরা এটার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এ আইন সংশোধন করে সপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও বার কাউন্সিলের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।
একইসঙ্গে তিনি হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে বিচারক স্বল্পতার প্রসঙ্গ টেনে দ্রুত বিচারক নিয়োগের দাবি জানান।
বিচারপতি নিয়োগ করতে হলে তো আগে আইন সংশোধন করতে হবে, নাহলে এখন কীভাবে দ্রুত বিচারক নিয়োগ করা যাবে- এ প্রশ্নের উত্তরে বার সভাপতি খোকন বলেন, “ইচ্ছা থাকলে ৪/৫ দিনের মধ্যে আইন সংশোধন করা যায়।”
আরও পড়ুন:
সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি
বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ 'বৈষম্যমূলক': বার সভাপতি