এখন পর্যন্ত সিআইডির তরফে কিছু জানানো হয়নি।
Published : 22 Jan 2025, 09:22 PM
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিবর্তে করতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজন্য প্রায় নয় বছর আগে বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি করা এ মামলার এখন পর্যন্ত হওয়া তদন্তের অগ্রগতির তথ্য এবং মামলার সিডি ও আলামতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রেকর্ডপত্র দুদকে হস্তান্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে সিআিইডিকে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়টি কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ। এজন্য মতিঝিল থানার দায়ের করা এ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কমিশন করতে চায়।''
হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়ার এ ঘটনায় ঢাকায় দায়ের করা মামলার তদন্ত নয় বছরেও শেষ করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
দফায় দফায় সময় নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি সংস্থাটি। আদালতে বারবার প্রতিবেদন জমা দিতে তারা সময় চাওয়ায় একের পর এক শুনানি পেছাচ্ছে। এরইমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাও বদল হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুদক গত ৩১ ডিসেম্বর সিআইডিতে চিঠি দিয়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব চেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সিআইডির তরফে কিছু জানানো হয়নি।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। স্থানান্তরিত এসব টাকা ফিলিপিন্সে পাঠানো হয়েছিল।
দেশের অভ্যন্তরেরই কোনো একটি চক্রের সহায়তায় এ অর্থ চুরি করা হয় বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
পরে সিআইডির তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ মোট ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করার কথা বলা হয়।
সিআইডিতে পাঠানো দুদকের চিঠিটিতে মামলাটি হস্তান্তরের কারণ তুলে ধরে বলা হয়, ২০১৬ সালে ১৫ মার্চ রির্জাভ চুরির মামলা করা হয়, যা এখন সিআইডি তদন্ত করছে।
“তবে দণ্ডবিধির ২১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ২ ধারা ও ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ১১০ ধারা অনুযায়ী ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ জড়িত কর্মকর্তারা পার্বলিক সার্ভেন্ট। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ধারা অনুযায়ী কেবল দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্তযোগ্য হওয়ায় ওই মামলার তদন্ত সিআইডি থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে হস্তান্তরের জন্য চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে।
এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।
রিজার্ভ চুরির তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি। ২০২২ সালের এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়।
রায়ে বলা হয়, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই।
এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল।
রিজার্ভ চুরির তদন্তে নতুন কর্মকর্তা, প্রতিবেদন জমার তারিখ ফের পেছাল
রিজার্ভ চুরি: বিবাদীদের 'সমঝোতার সুযোগ দিয়েছে' নিউ ইয়র্কের আদালত