Published : 09 Oct 2024, 12:26 AM
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের এক অগ্রপথিক মানবেন্দ্র নারায়ণ লামরার সংবিধান দর্শন ছিল বহুত্ববাদী ও অন্তর্ভূক্তিমূলক, যার মধ্যে একটি বহুভাষা, বহুজাতি ও বহু সংস্কৃতির দেশ গঠনের নির্দেশনা পাওয়া যায়।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ”মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সংবিধান দর্শন: জুলাই গণঅভ্যুত্থান, রাষ্ট্র সংস্কার ও আদিবাসী জাতিসমূহের অংশীদারিত্ব” শিরোনামে ‘বাহাস’ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মাওরুম জার্নাল ও আদিবাসীদের গণমাধ্যম আইপিনিউজ এর যৌথ উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়, সেখানে কথা বলার সময় বক্তারা বিষয়টির ওপর আলোকপাত করেন।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, “বর্তমান সংবিধান একটি সামন্তবাদী সংবিধান। যে সংবিধানকে ভেঙে এম এন লারমা, সন্তু লারমারা বের হয়ে উঠে আসতে চেয়েছেন। এ সংবিধান কেবল মুসলমানের, এ সংবিধানে অন্য ধর্মের স্বীকৃতি নেই। এই সংবিধান কেবল বাঙালির, অন্য কোনো জাতির স্থান দেওয়া হয়নি। দেশের সংবিধানে, রাষ্ট্র সিস্টেমে বহুত্ববাদের স্থান দেওয়া হয়নি। অথচ বাংলাদেশ একটি বহুভাষা, বহুজাতির, বহু সংস্কৃতির দেশ।”
"দেশের সমস্থ সিস্টেম স্বৈরাচারী বানানোর পথ খোলা করে রেখেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুধু মানুষ বদলেছে, সিস্টেম বদলায়নি।"
আইপিনিউজ এর উপ-সম্পাদক সতেজ চাকমার সঞ্চালনায় এই বাহাস ও মতবিনিময় সভার সূত্রধর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ।
তিনি বলেন, “এম এন লারমার সংবিধান দর্শন বহুত্ববাদী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল, যেখানে সমাজের সকল শ্রেণি, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে। লারমা সংবিধানের মাধ্যমে এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন, যা শ্রেণি এবং জাতিগত বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে সবার স্বার্থকে সুরক্ষা দেবে।”
অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, কবি ও লেখক মিঠুন রাকসাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ও সাংবাদিক অনিক রায়, আইনজীবী ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সায়ক চাকমা বক্তব্য দেন।