চার আলাদা মামলায় তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 24 Feb 2025, 01:02 PM
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পুলিশের সাবেক এডিসি শাহেন শাহ এবং ঢাকা উত্তর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তারকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ের চার মামলায় রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার সকালে আলাদা শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জাকির হোসাইন এসব রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর মধ্যে আতিকুল ইসলামকে ভাটারা থানাধীন সোহাগ মিয়া হত্যা মামলায় ৪ দিন, নজরুল ইসলাম মজুমদারকে মিরপুর এলাকায় আসিফ হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
আর সাবেক এডিসি শাহেন শাহকে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় ৩ দিন এবং শামীমাকে তেজগাঁওয়ের তাহমিদ মুবিন রাতুল হত্যাচেষ্টা মামলায় ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আতিক ও নজরুলকে ৫ দিন করে, শাহেন শাহকে ১০ দিন এবং শামীমাকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চান।
শুনানি নিয়ে আদালত জামিন নাকচ করে চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
আতিকের মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানাধীন মাদানী এভিনিউ ১০০ ফিট রোডে ফরাজী হাসপাতালের সামনে আন্দোলনে অংশ নেন কিশোর মো. সোহাগ মিয়া (১৬)। আসামিদের ছোড়া গুলি তার বাম কান দিয়ে ঢুকে মাথায় পেছনে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৯১ জনকে আসামি করে গত ২০ আগস্ট ভাটারা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
নজরুল ইসলাম মজুমদারের মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুর থানাধীন রাব্বানী হোটেলের সামনে গত ১৯ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন আসিফ। আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হলে সহযোদ্ধারা তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করান। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গত ১ নভেম্বর মিরপুর থানায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়।
শাহেন শাহের মামলায় বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘হত্যা ও গুম’ করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করা হয়। শাহেন শাহ এ মামলার ৪৯ নাম্বার আসামি।
শামীমা আক্তারের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ১৬ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ মুবিন রাতুল। পরে তার বাড়িতে গিয়েও হামলা ভাংচুর করা হয়। বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাতে রাতুলের বাবা-মা আহত হন। পরে এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়।
সোমবার সাবেক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুকে খিলগাঁও থানার এক হত্যা মামলায়, সাদেক খানকে মোহাম্মদপুর থানার এক মামলায়, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আদাবর থানার এক মামলায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে শাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতিকে রামপুরা থানার এক মামলায়, নজরুল ইসলাম মজুমদারকে উত্তরা পূর্ব থানার এক হত্যা মামলায়, বাড্ডা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহাকে বাড্ডা থানার মামলায়, একই থানার আরেক মামলায় সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।