মন্ত্রণালয় বলছে, বায়ুমানের এই দশায় বাইরে বের হতে হলে সবারই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
Published : 10 Dec 2024, 08:07 PM
ঢাকা ও আশপাশের এলাকার বায়ুমান (একিউআই) ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দশায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ‘অতি প্রয়োজন’ ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, বায়ুমানের এই দশায় বাইরে বের হতে হলে সবারই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বায়ুমানের নিয়মিত তথ্য দেখে জনগণকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সেখানে।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের পর্যবেক্ষণ বলছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই ছিল ২০৫, বায়ুমানের এই পরিস্থিতিকে বলা হয় 'অস্বাস্থ্যকর'। ঢাকা তখন দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় দুই নম্বরে অবস্থান করছিল।
তবে বাতাসের একিউআই আরও বাড়তে থাকে রাত ১০টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত। ওই সময় ঢাকার বায়ুমান পরিস্থিতি ২০০ এর উপরেই থাকে, কখনো কখনো ৩০০ ছাড়িয়ে যায়।
বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন-পিপিএম) এককে।
দূষণের মাত্রা বুঝতে পিএম ২.৫, পিএম ১০ ছাড়াও সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও গ্রাউন্ড লেভেল ওজোনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিবেচনা করে তৈরি করা হয় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে সোমবার পর্যন্ত প্রকাশিত বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, গত ১২ অক্টোবর থেকে কয়েকদিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে ঢাকার একিউআই ১৫০ এর উপরেই থাকছে।
এই ৫৯ দিনের মধ্যে কেবল ১২ দিন একিউআই ১৫০ এর নিচে ছিল এবং ১৩ দিন ২০০ এর উপরে ছিল। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার একিউআই ছিল ৩৩৫।
এমন পরিস্থিতিতে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে রাখা, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুইবার পানি ছিটানো এবং পুরনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করার জন্য ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।