“জনপ্রতিনিধিত্ব জনস্বার্থকে কেন্দ্র করে যেটা হওয়ার কথা, সেটা বাস্তবে নেই। এটা ক্ষমতাকেন্দ্রিক জনপ্রতিনিধিত্ব,” বলেন ইফতেখারুজ্জামান।
Published : 09 Jun 2024, 06:48 PM
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে ক্ষমতাসীন দল ‘নিজেদের মধ্যেই’ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
এ নির্বাচন নিয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তিনি বলেছেন, “নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অনেক সময় যেটা প্রকাশিত হয়েছে ক্ষমতার অন্তর্দ্বন্দ্ব, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
“এটা ইঙ্গিত দিচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর উপলব্ধি করার সময় এসেছে, জনপ্রতিনিধিত্ব জনস্বার্থকে কেন্দ্র করে যেটা হওয়ার কথা, সেটা বাস্তবে নেই। এটা ক্ষমতাকেন্দ্রিক জনপ্রতিনিধিত্ব।”
চার ধাপে গত ৯ মে, ২১ মে, ২৯ মে ও ৫ জুন সাড়ে ৪০০ এরও বেশি উপজেলার ভোট শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে স্থগিত হওয়া ১৯ উপজেলার নির্বাচনও শেষ হয়েছে রোববার।
এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেছে টিআইবি।
ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজেদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “নির্বাচিতদের অন্তত ১২ শতাংশ কোটিপতি রয়েছে। এবারের ভোটে জয়ীদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের সদস্য।”
চেয়ারম্যান পদে নারী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২ শতাংশ এর কম জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক অঙ্গনে সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের কথা বলা হয়েছে। এ জায়গায় আমাদের ঘাটতি রয়েছে।”
নির্বাচনে ‘একই দলের প্রাধান্য’ প্রতিফলিত হয়েছে মন্তব্য করে ইফতেখার বলেন, “রাজনৈতিক অঙ্গনে দলীয় যে একচ্ছত্র প্রাধান্য হয়েছে, একই দলের প্রাধান্য তারই প্রতিফলন হয়েছে উপজেলা নির্বাচনে। যদিও দলীয়ভাবে নির্বাচন হয়নি; কিন্তু সিংহভাগ বা ৯০ শতাংশের বেশি সরকারদলীয় সদস্য, নেতারাই জিতেছেন।”
উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিরও ‘বিভ্রান্তিমূলক অবস্থান’ ছিল মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “দলীয়ভাবে বর্জনের ঘোষণা দিলেও তাদের অনেকে অংশ নিয়েছেন। তাদের ফলাফল উল্লেখযোগ্য কিছু নয়।”
টিআইবি পর্যবেক্ষণে বলেছে-
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা পেছনে ফেলেছেন সংসদ সদস্যদের। গত ৫ বছরে একজন সংসদ সদস্যের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ। যেখানে একজন চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ১১ হাজার ৬৬৬ শতাংশ।”
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যারা ক্ষমতায় থাকতে পারেন, তারা সম্পদ বিকাশের সুযোগ পান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশাল আয় ও সম্পদের বিকাশ ঘটেছে। কারো কারো ক্ষেত্রে বিশাল সম্পদের যে বিকাশ ঘটেছে তা কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে ক্ষমতার কোনো অপব্যবহার হয়েছে কিনা তা প্রশ্ন রাখে।”
সংবাদ সম্মেলনে হলফনামার বিস্তারিত তুলে ধরেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
পুরনো খবর-
উপজেলা ভোটের প্রথম ধাপে কোটিপতি প্রার্থী ১১৭ জন: টিআইবি
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে ভোটের হার ৩৪.৭৭%
খুবই সন্তুষ্ট, নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হয়েছে: উপজেলায় ভোট নিয়ে সিইসি
উপজেলা চেয়ারম্যান: লড়াইয়ে নারী মাত্র ৪%, 'প্রতিবন্ধকতা' পদে পদে