সংগঠনটি বলেছে, ভবিষ্যতেও এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে যতবার দরকার হবে, ততবারই উদীচী গান, নাচ, নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে।
Published : 15 Apr 2024, 08:03 PM
বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনে সময় বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত না মেনে প্রতিবাদী অনুষ্ঠান করা নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে উদীচী।
সোমবার এ নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের বক্তব্যের পর বিকালে এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলছে, ”সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এ ধরনের বক্তব্য দুঃখজনক।”
উদীচীর প্রচার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সম্পাদক কংকন নাগের পাঠানো বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, "বর্ষবরণে উদীচীর আয়োজন দুঃখজনক ও অনাকাঙ্খিত বলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তাতে বিস্মিত হয়েছে উদীচী।
বর্ষবরণের পরদিন সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে উদীচীর প্রতিবাদী অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, “সরকারের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা পয়লা বৈশাখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যে নির্দেশনা জারি করেছিল, সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান করা ছিল হঠকারী ও দুঃখজনক। তাদের এই আচরণে সরকার খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত।”
উদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়, "যেকোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো ও সংগঠিত হওয়া জনগণের সংবিধানসম্মত অধিকার। বর্ষবরণ আয়োজনের সময় সংকোচন করতে সরকারের নির্দেশের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান আয়োজন করে উদীচী সেই সংবিধানসম্মত অধিকারই চর্চা করেছে। একইভাবে সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বর্ষবরণের দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।"
উদীচী সবসময়ই মনে করে, "আবহমান বাংলার সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ। আর সেজন্যই বহু বছর ধরেই এ উৎসবের বিরুদ্ধে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানা ধরনের অপপ্রচার ও কুৎসা রটিয়ে চলেছে। আমরা জানি প্রতিবছর খ্রিষ্ট্রীয় নতুন বছরের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সমস্যা হয় না।
”কিন্তু, কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানালেও নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সাথে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর অবস্থানের সাযুজ্য রয়েছে বলে মনে করে উদীচী।"
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, "বর্ষবরণ উৎসবকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘেরাটোপে বেঁধে দেয়ার হঠকারি সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আস্কারা দেওয়া হচ্ছে। এধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়।”
এ কারণে ভবিষ্যতেও এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে যতবার দরকার হবে, ততবারই উদীচী গান, নাচ, নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: