কাশিমপুর কারাগার থেকে জঙ্গিদের আদালতে হাজির করতে না পারায় ফিরে গেলেন সাক্ষী।
Published : 16 Jul 2024, 07:18 PM
ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যা মামলায় সবশেষ সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তার স্ত্রী আশা মনি; এরপর কেটে গেছে দুই বছর।
দীর্ঘ এ সময় পর আলোচিত এ মামলায় মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে একজন সাক্ষ্য দিতে এলেও ফিরে যেতে হয়েছে তাকে। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে অবরোধ ও সংঘাতময় এ দিনে কাশিমপুর কারাগার থেকে জঙ্গিদের কাঠগড়ায় হাজির করতে না পারায় সাক্ষ্য নিতে পারেনি আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার মামলার জব্দতালিকা প্রস্তুতকারী পুলিশ কর্মকর্তা শেখ মাহবুবুর রহমান আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন। কিন্তু আসামিদের অনুপস্থিতিতে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সাল আতিক বিন কাদের সাক্ষ্যের জন্য আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ রাখেন।
এর আগে ২০২২ সালের ২২ অগাস্ট সাক্ষ্য দিয়েছিলেন নিলয়ের স্ত্রী আশা মনি। পরের মাসে জেরা হয়। এরপর দীর্ঘদিন এ মামলার কোনো সাক্ষী আদালতে আসেননি।
২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট ভরদুপুরে বাড়ি দেখার নাম করে এসেছিল ‘জঙ্গিরা’, ঢুকেই কোপাতে শুরু করল ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে, মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যাওয়ার সময় বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পর আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে এমন বর্ণনাই দিয়েছিলেন নীলাদ্রির স্ত্রী আশামনি।
তিনি বলেন, নীলাদ্রির উপর হামলার সময় তাকে পিস্তলের মুখে ঘরের বারান্দায় আটকে রাখা হয়েছিল।
যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৭ বছর বয়সী নীলাদ্রি ইস্টিশন ব্লগে লিখতেন ‘নিলয় নীল’ নামে।
লেখালেখির কারণে খুন হওয়ার কিছু দিন আগে থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন তিনি। নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে হত্যাকাণ্ডের আড়াই মাস আগে জিডি করতে গেলেও থানা তা নেয়নি বলেও ফেইসবুকে এক পোস্টে লিখে যান তিনি।
ঢাকার খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ান টেম্পোস্ট্যান্ডের কাছে ৮ নম্বর রোডের ১৬৭ নম্বরের পাঁচতলা ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন তিনি।
ওই সময় দেশজুড়ে উগ্রবাদীরা একের পর এক ‘টার্গেট কিলিং’ শুরুর পর ২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট শুক্রবার ছুটির দিনে দুপুরে সেই বাড়িতে হামলায় চালিয়ে নীলাদ্রিকে খুন করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের দিনই আশা মনি অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় ১২ আসামিকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ।
পাঁচ বছর পর ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর ১৩ জনকে আসামি করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। তারও দুই বছর পর গত ১৮ জানুয়ারি ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন হয়।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে সোমবার বাদী আশামনির সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
ডিবির পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াসের দেওয়া অভিযোগপত্রে হামলাকারীদের নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের জঙ্গি বলে শনাক্ত করা হয়।
সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হককে প্রধান আসামি করে দেওয়া অভিযোগপত্রের অন্য আসামিরা হলেন- মাসুম রানা, সাদ আল নাহিন, মো. কাওসার হোসেন খাঁন, মো. কামাল হোসেন সরদার, মাওলানা মুফতি আব্দুল গফ্ফার, মো. মর্তুজা ফয়সল সাব্বির, মো. তারেকুল আলম ওরফে তারেক, খায়রুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাহাব, মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জুবায়ের।
পুরনো খবর
আদালতে সাক্ষ্যে নীলাদ্রি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিলেন স্ত্রী আশামনি
৫ বছর পর ব্লগার নীলাদ্রি হত্যার অভিযোগপত্র
আদালতে সাক্ষ্যে নীলাদ্রি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিলেন স্ত্রী আশামনি
ঢাকায় ভর দুপুরে বাসায় ঢুকে ব্লগার হত্যা