“এই হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত না ডাকাতির উদ্দেশে ঘটানো হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ”
Published : 20 Jun 2024, 01:54 PM
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার এক উপ পরিদর্শকের বাবা-মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; যাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন।
বৃহস্পতিবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকার পশ্চিম মোমেনবাগের ওই বাসা থেকে লাশ দুটো উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন–জনতা ব্যাংকের সাবেক গাড়িচালক শফিকুর রহমান (৬০) এবং তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (৫০)। তাদের ছেলে ইমন এসবির এসআই।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে তারা মোমেনবাগের ওই চারতলা বাড়িতে যান।
নিজেদের বাড়ির দোতলার বসবাস করতেন এই দম্পতি। ওপরের দুই তলা এবং নিচতলার একপাশে ভাড়াটেরা থাকেন।
পরিদর্শক জাকির বলেন, “শফিকুরের লাশ বাড়ির নিচতলার গ্যারেজে এবং ফরিদার লাশ দোতালায় শোবার ঘরে পাওয়া যায়। গৃহকর্তাকে কুপিয়ে এবং তার স্ত্রীকে থেঁতলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।“
ওই দম্পতির এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে ও মেয়েকে তারা যাত্রবাড়ী এলাকায় বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ইমন ও পুত্রবধূও ওই বাসায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। তবে ঈদ উপলক্ষে ইমন ফেনীতে তারা দাদাবাড়িতে এবং তার স্ত্রী নিজের বাবার বাড়িতে চলে যান। ছুটির এই কদিন শফিকুর ও ফরিদাই ছিলেন বাসায়।
পরিদর্শক জাকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমক বলেন, ভোরবেলা ফজরের নামাজ পড়তে বেরিয়েছিলেন শফিকুর রহমান। সকালে বাড়ির নিচে তার লাশ দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা ৯৯৯ এ ফোন দেন।
“এই হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত না ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
যাত্রাবাড়ি থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, গৃহকর্তা শফিকুর রহমান প্রতিদিন সকালে উঠে বাড়ির পানির মোটর ছাড়তেন এবং বাসায় ফজরের সুন্নত নামাজ পড়ে মসজিদে যেতেন জামাত ধরতে।
“ধারণা করছি পানির মোটর ছাড়ার জন্য তিনি ঘর থেকে বের হলে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যার পর দোতলায় উঠে তার স্ত্রীকে হত্যা করে।”
পুলিশ গিয়ে বাসার নিচের প্রধান গেইট ও দোতলার ঘরের দরজা খোলা পেয়েছে। ঘরের মধ্যে আলমারিও খোলা ছিল।
তবে ফরিদা ইয়াসমিনের গায়ে স্বর্ণালঙ্কার থাকলেও খুনিরা তা নেয়নি। আর বাসা থেকে কিছু খোয়া গেছে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান ওসি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার নাহিদ ফেরদৌস বলেন, তারা এখনও ‘পুরো অন্ধকারে’। খুনি একজন না একাধিক, হত্যাকাণ্ডে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ।
“শফিকুর রহমানের ছেলের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানার চেষ্টা করব, কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা বা অন্য কোনো সমস্যা তাদের ছিল কিনা।”
এক প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ ফেরদৌস বলেন, ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা বেশি নেই। আশপাশে যেগুলো আছে, তার প্রায় সবই নষ্ট।
“আমরা চেষ্টা করছি হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার পাশপাশি হত্যার মোটিভ বের করতে,” বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।