যুদ্ধ বন্ধে দ্রুত জাতিসংঘের কার্যকর পদক্ষেপ চান প্রধানমন্ত্রী

কাতারে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।

ছবি: বাসস

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আবারও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, যুদ্ধ যত দ্রুত শেষ হবে ততই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

শনিবার কাতারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) এ বৈঠক হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) যোগ দিতে এদিন স্থানীয় সময় দুপুরে দোহায় পৌঁছান। এর আগে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে তিনি যাত্রা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন বলে বাসস জানিয়েছে। এসময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারেন। যুদ্ধের কারণে সব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে পণ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে, যাতে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব ভুগছে। যত দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ হবে ততই তা সবার জন্য মঙ্গল বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিকরা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতেও জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।

ভাসানচরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের বিষয়ে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহযোগিতা চান।

প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই একমত হয়েছেন, সেখানে রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো পরিবর্তন আসুক বা না আসুক রোহিঙ্গাদের শিগগিরই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।

বৈঠকে আন্তোনিও গুতেরেস উন্নয়ন, কূটনীতি এবং কোভিড মহামারী মোকাবেলায় অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের জন্য তারা গর্বিত যিনি কোভিড ১৯ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে তৈরি সংকট মোকাবেলা করেও বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

এদিন প্রধানমন্ত্রী কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে ইউএনজিএ এর সভাপতি সাবা করোসির সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সাউথ-সাউথ দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেন। উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী সেভাবে সাহায্য না করায় জনগণের কল্যাণে যাতে বিকল্প সম্ভাবনা ও করণীয় নির্ধারণ করা যায়।

এ প্রসঙ্গে তিনি একদিনের জন্য এ বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সহযোগিতা কামনা করেন।

জবাবে ইউএনজিএ সভাপতি পরবর্তী সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে এ উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে অভিমত দেন। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এটিকে “একটি অলৌকিক ঘটনা” বলে উল্লেখ করেন।

তারা পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন।