এই ব্লগারকে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) বিবৃতির খবর প্রকাশের একদিন বাদে সোমবার এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই দাবি করেছেন।
বাংলাদেশে আল কায়েদার কোনো সক্রিয় তৎপরতার খবর পাওয়া না গেলেও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনটিকে অনুসরণ করে বলে মনিরুল আগেই জানিয়েছিলেন।
সোমবার নিজের কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন পাঁচজনের বেশি ব্যক্তিকে শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।”
হামলায় আহত অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা হামলাকারী পাঁচজন বলে দাবি করেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানি বলেছিলেন, চাপাতি হাতে দুজন হামলায় অংশ নিয়েছিল।
মনিরুল বলেন, “মনে হচ্ছে, তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। একটি মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে আগেও তারা সাইলেন্ট কিলিং বা টার্গেটেড কিলিং করেছে, যার প্রমাণও আছে।”
অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরপরই ‘আনসার বাংলা সেভেন’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দায় স্বীকার করে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। ওই বার্তাটি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বলেও দাবি করেন মনিরুল।
একুশের বইমেলা চলাকালে ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের মাসখানেকের মধ্যে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান খুনের সময় জনতা যে দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছিল, তারাও জিজ্ঞাসাবাদে আনসারুল্লাহর প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীর সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকার করেন।
মুফতি জসীম ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যামামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বুয়েট শিক্ষার্থী দ্বীপকে হত্যা, ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিনকে হত্যার চেষ্টার জন্যও আনসারুল্লাহকে দায়ী করা হচ্ছে।
মনিরুল বলেন, “আনসারুল্লাহ বাংলাটিম আল কায়েদাকে পুরোপুরি অনুকরণ, অনুসরণ করে। তারা আল কায়েদার নেতাদের কৌশল অনুসরণ করে, আল কায়েদার নেতাদের নিজেদের নেতা বলে মনে করে।”
বাংলাদেশে আল কায়েদা বা একিউআইএসের তৎপরতার কোনো তথ্য এখনও গোয়েন্দাদের হাতে নেই বলে মনিরুল জানান।
“আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কেউ সরাসরি আল কায়েদার সঙ্গে জড়িত, এমন কোনো তথ্যও নেই। তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে আল কায়েদার সঙ্গে জড়িত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে আগে থেকেই তথ্য রয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এফবিআই সহায়তা দিচ্ছে। তারা আলামত সংগ্রহ করলেও এখনও কোনো ফলাফল দেয়নি বলে মনিরুল জানান।