বিএনপির নির্বাচন বর্জন

ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় সব কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগ এনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2015, 06:38 AM
Updated : 28 April 2015, 06:38 AM

মঙ্গলবার ভোট শুরুর চার ঘণ্টার মাথায় বেলা ১২টার পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “এটা কোনো নির্বাচন হয় নাই। এটাকে নির্বাচন বলা যায় না। ভোটবিহীন এই নির্বাচনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। ... এই নির্বাচন আমরা বর্জন করি। এতে গণতন্ত্রের প্রহসন করা হয়েছে।

“এই প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বড় পরাজয় হয়েছে।”

ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ও উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আওয়ালকে পাশে নিয়েই এ ঘোষণা দেন মওদুদ।

এরপর আফরোজা ও তাবিথও বিভিন্ন অভিযোগ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মনজুর আলম এর ঘণ্টাখানেক আগেই ভোট বর্জনের কথা জানান।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের প্রায় সবগুলো কেন্দ্রে এজেন্টদের ঢুকতে ‘বাধা দেওয়া’ হয়েছে।

“২/১টি কেন্দ্র যেসব এজেন্ট ঢুকেছিল, তাদের সাড়ে ৮টার মধ্যে বের করে দেওয়া হয়েছে। অনেক এজেন্টকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।”

‘শতকরা ৫ ভাগ মানুষও’এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আমরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম সরকার ও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে না। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। নির্বাচন তো দূরের কথা, আজকে তারা (সরকার) নির্বাচনটাকেই অর্থহীন করে দিয়েছে।”

লাগাতার অবরোধ-হরতাল শিথিল করে সিটি নির্বাচনে আসা বিএনপি ভোটের আগের রাতেই হুমকি দিয়েছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তারা ফের আন্দোলনে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ বলেন, “নির্বাচনে নিয়োজিত হাজার পুলিশ-র‌্যাব... তারা নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করতে নয়, ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছে। তারা শাসক দলের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।”

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, “ভোট কেন্দ্রে চিরকুট দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের দেওয়া ওই চিরকুট ছাড়া কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। নগ্নভাবে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “ভোট কেন্দ্রগুলোতে কেবল ক্ষমতাসীনদের এজেন্ট ছিল। পুলিশ ও র‌্যাবে সহায়তায় ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করেছে। তারা সকলে নিজেরা ব্যালট পেপারে সিল মেরে ভোট বাক্স ভর্তি করেছে। এটা একটি ভোটবিহীন নির্বাচন হয়েছে। আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করি।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে গঠিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদ, শওকত মাহমুদ, মাহফুজউল্লাহ, আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমা রহমান, আহমদ আযম খান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আসাদুজ্জামান রিপন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, শাইরুল কবীর খান, শামসুদ্দিন দিদার এবং এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হেসেন ঈসা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।