মঙ্গলবার সকাল ৮টায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট শুরুর পর তিন ঘণ্টার মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসানো মনিটরিং সেলে দুই দফা সংবাদ ব্রিফিং করে দলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “এখন যেভাবে ভোটকেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারা চলছে, এরপর সুষ্ঠু নির্বাচন করার আর কোনো সুযোগ নেই।”
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ‘এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত’ অভিযোগ করে মাসুদ তালুকদার বলেন, “আমরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই।”
ঢাকা উত্তরে ১০৯৩টি এবং দক্ষিণে ৮৮৯টি কেন্দ্র সিটি নির্বাচনের ভোট চলছে। সকাল থেকেই বিএনপির মনিটরিং সেল বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য লিপিবদ্ধ করছে।
সকাল ১০টায় প্রথম দফা ব্রিফিংয়ে এসে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, “আমাদের কাছে আসা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় পাঁচশর বেশি ভোটকেন্দ্র থেকে আমাদের সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বলতে গেলে এক নীরব সন্ত্রাস চলছে।”
তিনি বলেন, “পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারে যে আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছিল, তা ইতোমধ্যে প্রহসনে পরিণত হয়েছে।”
নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীনদের ‘দলীয় কর্মীর মতো’ আচরণ করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মাসুদ তালুকদার বলেন, “কিছু কিছু লোক পর্যবেক্ষকের ব্যাজ পড়ে সরকারি দলের পক্ষে কাজ করছে। সাধারণ ভোটাররা কেন্দ্রে ঢুকতে পারছে না।”
যেসব কেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থিতপ্রার্থীদের এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে তার অভিযোগ, সেই তালিকাও তিনি ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণে ফকিরেরপুল প্রাথমিক বিদ্যালয়, নটরডেম কলেজ, গোরান আর্দশ স্কুল, উত্তর গোরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমলাপুর স্কুল ও যাত্রাবাড়ী শহীদ জিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, হাবিবুলল্লাহ বাহার কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গালর্স কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজসহ ৩৫টি কেন্দ্রে এবং উত্তরে মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ধানমন্ডি উচ্চ বিদ্যালয়, বাওনিয়া বাঁধ উচ্চ বিদ্যালয়, উদায়ন উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৪৩টি কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
মাসুদ বলেন, “আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেওয়ার এসব অভিযোগ প্রমাণ করে, আমাদের দাবি কতোটা যৌক্তিক ছিল।”
ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাস ভোটের দিন প্রকাশ্যে আসেননি। তবে তার পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসা স্ত্রী আফরোজা আব্বাস কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরে অভিযোগ করেছেন, তাদের পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এজেন্টদের মারধর এবং কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব রেজা হাবিব, আসাদুল করীম শাহিন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।