জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী স্থপতি আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের এক আসামি।
Published : 10 Jun 2014, 08:16 PM
গত ১ জুন হাই কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে সাদমান ইয়াসির মাহমুদ নামে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র এই শিক্ষার্থী কারাগার থেকে ছাড়া পান বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনের অন্যতম কর্মী রাজীব হত্যাকাণ্ডের সম্পূরক অভিযোগপত্রে ইয়াসিরের নাম রয়েছে।
তার আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে এবং তিনি ঘটনা জানতেন কিন্তু সরাসরি জড়িত ছিলেন না-এ সব যুক্তিতে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।”
বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের বেঞ্চ আসামি সাদমানকে ছয় মাসের জামিন দেন। তবে এই আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
জামিন পেয়ে আসামির কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিমের। মঙ্গলবার আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শে তিনি আপিলের নোট দেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টা আপনাকে পরে জানাচ্ছি।”
শাহবাগ আন্দোলন শুরুর ১০ দিনের মাথায় গত বছরের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মিরপুরের কালসীতে বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রাজীবকে।
হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাড়ির সামনেই ইয়াসির (২০) ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
অনলাইনে লেখালেখির মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের মুখোশ উন্মোচনে সক্রিয় থাকায় রাজীবকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। রাজীব ‘থাবা বাবা’ নামে ব্লগে লিখতেন।
রাজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ২ মার্চ নর্থ সাউথের পাঁচ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তারা হলেন- ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দীপ (২২), মাকসুদুল হাসান অনিক (২৬), এহসান রেজা রুম্মান (২৩), নাঈম সিকদার ইরাদ (১৯) ও নাফিস ইমতিয়াজ (২২)।
তাদের মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে ইয়াসিরকে ওই বছরের ১৪ অগাস্ট গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তাকে রিমান্ডেও নেয়া হয়েছিল।
গ্রেপ্তারের পর তার উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ বলেছিল, “সে (সাদমান) বলেছে, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় ব্লগার রাজীবকে হত্যা করা হয়েছে।”
হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর গত ২৯ জানুয়ারি নর্থ-সাউথের সাত শিক্ষার্থী ও উগ্রপন্থি সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ।
অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি আসামি হলেন নর্থ সাউথের সাবেক ছাত্র রেজওয়ানুল আজাদ রানা। পলাতক রানার বিরুদ্ধে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।