গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও স্থপতি আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থী ও উগ্রপন্থী সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
Published : 28 Jan 2014, 04:47 PM
গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আট আসামির বিরুদ্ধে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
মুফতি জসীম ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি সাত আসামি হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দীপ (২২), মাকসুদুল হাসান অনিক (২৬), এহসান রেজা রুম্মান (২৩), নাঈম সিকদার ইরাদ (১৯), নাফিস ইমতিয়াজ (২২), সাদমান ইয়াছির মাহমুদ (২০) ও রেজওয়ানুল আজাদ রানা।
এদের মধ্যে শিবির নেতা রানা পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আবেদন করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ব্লগার রাজীবকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মধ্যেই গতবছর ১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের কালসীতে খুন হন রাজীব। ঘাতকরা এই নবীন স্থপতিকে তার নিজের বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করে, যিনি ইন্টারনেটে লেখালেখির মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের মুখোশ উন্মোচনে সক্রিয় ছিলেন।
এরপর ৮ মার্চ ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ফয়সাল, অনিক, রুম্মান, ইরাদ ও নাফিসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর দুই দিনের মাথায় আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বড়ভাই’ শিবির নেতা রানার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী তারা রাজীবকে হত্যা করে।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ওই পাঁচজনের জবানবন্দিতে হত্যার প্ররোচনাদাতা হিসাবে মুফতি জসীমের নামও উঠে আসে। গত ১২ অগাস্ট বরগুনা থেকে মুফতি জসীমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে ১৪ অগাস্ট রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাদমান ইয়াসির মাহমুদকে, যে হত্যাকাণ্ডের সময় কালসীতে রাজীবের বাড়ির সামনেই ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
রাজীব হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর এই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ নেতা জসীমকে গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর বছিলা মসজিদ সংলগ্ন তার কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বেশকিছু বই এবং অর্ধ শতাধিক সিডি উদ্ধার করে পুলিশ।
সে সময় মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, জসীমের অফিসে তারা ১২ জনের ছবিসহ একটি তালিকা পেয়েছেন, যাতে রাজীব হায়দারও আছেন।