Published : 01 Jun 2014, 07:22 PM
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরদের বিভক্তি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমে কথা বলার একদিন পর রোববার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এই মত জানালেন।
যুদ্ধাপরাধের মামলার আপিলগুলোতে যুক্ত হওয়া মাহবুবে আলম বয়সের কারণে ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল রোববার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “ট্রাইব্যুনালে তারা (প্রসিকিউটর) যা করছেন, সেটা আপনাদের মতো আমিও শুনি। ফৌজদারি মামলা তারই করা উচিত, যার ফৌজদারি মামলা করার অভিজ্ঞতা আছে, যিনি ১০-৫টা বিচারে ছিলেন।
“এখানে অ্যাডভেঞ্চারিজমের কোনো অবকাশ নেই। তবে আমি মনে করি, এখানে প্রধান প্রসিকিউটিরের সঙ্গে অন্যদের একটা সমন্বয় থাকা উচিত। এটার প্রচণ্ড অভাব। এটা থাকা উচিত নয়।”
চার বছর আগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় প্রধান প্রসিকিউটর করা হয় গোলাম আরিফ টিপুকে। সম্প্রতি তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রসিকিউটর হন সৈয়দ হায়দার আলী।
গোলাম আরিফ দেশে ফেরার পর হায়দার আলীর সঙ্গে টানাপড়েন চলছে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের সমন্বয়ের জন্য এক সময় অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হলেও তাকে সম্প্রতি অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আনিসুল হক শনিবার বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরদের বিভেদ মেটাতে তিনি সবার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আইন মন্ত্রণালয় যেভাবে চালাতে চায়, সেভাবে চালানো উচিত। অন্যদের সেটা মানা উচিত। আইনমন্ত্রী নিজেও একজন বিখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ। উনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেল হত্যা মামলায় ছিলেন।”
গোলাম আরিফ টিপুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রধান প্রসিকিউটরও এক সময় জাঁদরেল আইনজীবী ছিলেন। উনার শুনানি শুনতে মানুষ রাস্তা থেকে কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে থাকত।
“তারপরও একটা কথা হলো, উনার তো বয়স হয়েছে। বয়স তো সবাইকে কাঁবু করে ফেলে। তখন নিজের আত্ম-উপলব্ধি করা উচিত যে, আমি এখনো কাজের জন্য উপযুক্ত আছি কি না।”
মাহবুবে আলম (ফাইল ছবি)
যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “তিনি (আইনমন্ত্রী)আইনগত বিষয়ে বলেছেন। দেখা গেল, অনেক উদ্যোগ নিয়ে সেখানে যাওয়া হল, কিন্তু দলটিকে বন্ধ বা জরিমানার আদেশ দেয়া যাচ্ছে না।
“শেষ পর্যন্ত এ রকম হলে সেটা ভীষণ রকম বেকায়দা হবে। তাই দেখে শুনে তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা তিনি বলেছেন।”
আইন সংশোধন না করে জামায়াতের বিচার সম্ভবপর নয় বলে বক্তব্য দেয়ার পর বিভিন্ন মহল থেকে আনিসুল হকের সমালোচনা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল নিয়ে আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলার কথাও বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এটাতে কী হবে? চূড়ান্তভাবে যে আদেশ হবে, সেটা এই পার্টি আমাদের দেশে থাকবে কি, থাকবে না। তাই চূড়ান্ত ফল একই।”