আদালতে জবানবন্দি দিলেন এবি সিদ্দিক

পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী এবি সিদ্দিক নারায়ণগঞ্জের আদালতে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শুক্রবার বেলা ১টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টের কার্যালয় থেকে আদালত প্রাঙ্গণে আনার পর তাকে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের খাসকামরায় নেয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জের এএসপি শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে একটি পোশাক কারখানার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিদ্দিককে নিরাপত্তা হেফাজতে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “তার মেডিকেল চেক-আপ করা হচ্ছে। এর পর তাকে এখান থেকে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে হাজির করা হবে।”

সেখানে বিচারক ঘটনার বিষয়ে অপহৃতের জবানবন্দি নেবেন বলে জানান তিনি।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এবি সিদ্দিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা পরীক্ষা করছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ড. মো. ফরহাদ।

পুলিশ সুপার বলেন, আদালত থেকে অপহরণের ঘটনাস্থল ফতুল্লার ভুইগড় এবং পরে ফতুল্লার দাপা এলাকায় নিজ কর্মস্থল হামিদ ফ্যাশনসের কারখানায় যাবেন আবু বকর সিদ্দিক।

এবি সিদ্দিকের সঙ্গে তার মা ও স্ত্রী রিজওয়ানাও রয়েছেন।

এদিকে অপহরণের সময় ক্ষতিগ্রস্ত তার ব্যবহৃত লাল গাড়িটি জেলা সার্জনের কার্যালয়ের সামনের সড়কে ফরেনসিক দল পরীক্ষা করে দেখছে বলে জানান তিনি।

অপহরণের প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর এবি সিদ্দিককে বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

পরে অটোরকিশায় ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডের বাসায় ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে কলাবাগানে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে পরিচয় নিশ্চিত করার পর তাকে ধানমণ্ডি থানায় নেয়া হয়।

খবর পেয়ে রাতেই ধানমণ্ডি থানায় ছুটে যান রিজওয়ানা হাসান, নারায়ণঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম, ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আখতার হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এর আগে অপহরণের প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় তাকে পাওয়া যায় বলে জানান মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “রাতে কলাবাগানে পুলিশের একটি তল্লাশি চৌকিতে একটি অটোরিকশা চেক করার সময় যাত্রী নিজেকে এবি সিদ্দিক বলে পরিচয় দেন। তাকে থানায় আনার পর পরিবারের সদস্যরা তার পরিচয় নিশ্চিত করেন।”

পরে পুলিশের হেফাজতে এবি সিদ্দিককে তার ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডের বাসায় নেয়া হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসা থেকে পরিবারের সদস্যরাসহ নারায়ণগঞ্জে নেয়া হয় তাকে।

নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিদ্দিক নিজের গাড়িতে ঢাকায় ফেরার পথে বুধবার দুপুরের দিকে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় সড়ক থেকে অপহৃত হন।

এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেন রিজওয়ানা হাসান। তার পেশাগত কাজে ক্ষিপ্ত হয়ে কেউ তার স্বামীকে অপহরণ করেছে বলে দাবি করেন পরিবেশ আন্দোলনের এই সংগঠক।

ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী রিজওয়ানা পরিবেশ ধ্বংসের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সক্রিয়, এই ধরনের অনেক মামলায় আইনি লড়াইও চালাচ্ছেন তিনি।