দেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগুন দিয়ে মানুষের জানমালের ক্ষতি করে জনসমর্থন আদায় করা যাবে না।
Published : 16 May 2013, 09:34 AM
সংলাপের ডাক প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী দলের ‘আলটিমেটাম’ দেয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার গণভবনে নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শেখ হাসিনা বলেন, “বিরোধীদলীয় নেতা চিন্তা করেন, কীভাবে লাশ ফেলে ক্ষমতায় যাবেন। উনার স্বামীও লাশ ফেলে ক্ষমতায় এসেছিল।”
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার জন্য তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, “বিরোধীদলীয় নেতা চেষ্টা করেছিলেন- আমাকে হত্যা করে ক্ষমতায় থাকতে।”
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ শোভাযাত্রার আগে ওই সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ এক হাজারের বেশি মানুষ।
এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপি চেয়ারপার্সন এখনো ‘সহিংসতার পথে হাঁটছেন’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “হেফাজত নামে ইসলামপন্থী- তাদের নামিয়ে, তাদের ঘাড়ে পা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাইলেন।”
“আমি আলোচনার কথা বললাম। উনি ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেন। বললেন, আমি পালানোর পথ পাবো না। এখন উনার পথ কোথায় গেল?”
বিরোধীদলের জনসমর্থন নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আগুন দিচ্ছেন। কিন্তু জনসমর্থন তো পাবেন না। জনগণের বিশ্বাস-আস্থা আমাদের প্রতি আছে। জনসমর্থন আছে।”
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিরোধীদলীয় নেত্রী কোন আশায় আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান? তত্ত্বাবধায়ক আসলে যে উনাকে আবার জেলে যেতে হবে না- এই গ্যারান্টি উনাকে কে দিল?”
বিগত সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ‘যা ঘটেনি’ এবার অনির্বাচিত সরকার এলে তাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “জনগণের কাছে যেতে পারে না। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে। এজন্য তারা হা করে বসে আছে।”
অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের পর ‘ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করতে’ একটি শ্রেণি অপেক্ষায় থাকে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অব্যাহত গণতন্ত্র না থাকলে দেশের মানুষের কোনো অর্জিই টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।… গণতন্ত্র যেনো সুসংহত হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।”
বিগত সরকারের সময় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করা হলেও বর্তমান সরকার তা দেশে ফিরিয়ে আনছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা এতিমখানার টাকাও আত্মসাৎ করেছেন।
নেতাকর্মীদের তিনি সতর্ক করে দেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনার পাঁচটি আসনে কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগ যাদের মনোনয়ন দেবে, স্থানীয় নেতাদেরও তা মেনে নিতে হবে।
“মনোনয়ন দিলে শুনতে হবে। না হলে যা হওয়ার তাই হবে।”
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর রাজনৈতিক নিপীড়নের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।