বন্দরনগরীতে হেফাজতে ইসলামকে কোন কর্মসূচি করতে না দিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত।
Published : 27 Apr 2013, 12:27 PM
কর্মসূচি করতে দিলে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী থাকতে হবে বলে হুঁশিয়ার করে দেন সংগঠনটির নেতারা।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
শুক্রবার বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে হেফাজতে ইসলামের রেসালাত সম্মেলনে মসজিদের খতিব জালাল উদ্দিন আল কাদেরীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত।
সংবাদ সম্মেলনে জালাল উদ্দিন আল কাদেরী তার উপর হেফাজতে ইসলামের হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেন।
তিনি আরো বলেন, “নামাযের আগে খুৎবা হয়েছে এবং পরে আখেরী মোনাজাতও হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা নামায আদায় করেছে। জামাতে কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি।
“কিন্তু নামায শেষে হেফাজতে ইসলামের শ’-দেড়শ লোক আমার উপর হামলা চালায়, মসজিদের ভিতর ইটপাটকেল, জুতা এবং বিভিন্ন জিনিস ছুড়ে মারে ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিক্ষিপ্ত বস্তুগুলো কলমা শরীফ ও কোরানে করিমের উপর গিয়ে পড়ল।”
সেখানে নামায পড়তে যাওয়া মুসল্লীরা তাকে রক্ষা করেছে উল্ল্যেখ করে জালাল উদ্দিন আল কাদেরী জানান, এসময় কয়েকজন মুসল্লীও আহত হয়েছেন।প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর পুলিশ তাকে উদ্ধার তার বাসায় পৌঁছে দেয়।
হেফাজত ইসলামের কর্মীরা এর আগে দুইবার মসজিদে এ ধরনের হামলা চালিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
“এ ধরনের ঘটনার পরও কেন পুলিশ তাদের সেখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয় তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
হেফাজতে ইসলামকে ‘লাঠিয়াল বাহিনী’ আখ্যায়িত করে খতিব জালাল উদ্দিন আল কাদেরী এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, আহলে সুন্নাতও সমাবেশ করেছে, তাদের হাতে কোন লাঠি ছিল না। কিন্তু হেফাজত কর্মীদের হাতে লাঠি থাকে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত এর প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী অভিযোগ করেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়।
তিনি দাবি করেন, তারা [হেফাজত] বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে রয়েছে। এতিম-মিসকিনদের নামে বিদেশ থেকে টাকা এনে তারা জঙ্গী আস্তানা করেছে।
ব্লগারদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের কথিত অপপ্রচারের প্রসঙ্গ টেনে আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক বলেন, “কেউ যদি নাস্তিক হয়, তাহলে আল্লাহ তার বিচার করবেন বা দেশের আইনে তার বিচার হবে।
“নাস্তিক ব্লগাররা ব্লগে নিখেছে। কিন্তু মসজিদে হামলা করেনি। হেফাজত কর্মীরা মসজিদে হামলা করেছে। বায়তুল মোকারমে হামলা করেছে এবং এর আগেও দুইবার এ (বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ) মসজিদে হামলা করেছে।”
হেফাজত ইসলাম মুখে ইসলামের কথা বললেও তারা ‘অন্তরে নবী-বিদ্বেষী’ বলেও দাবি করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সদস্য সচিব মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, এর আগেও তারা [হেফাজত] মসজিদের খতিবের উপর হামলা করে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন মহলের মধ্যস্থতায় দোষ স্বীকার করে জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছে।
“শুক্রবার সমাবেশ থেকে জুনায়েদ বাবুনগরী যাওয়ার পথে সুন্নিদের মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ পেয়ে ‘জঙ্গীরা’ হাটহাজারী পৌঁছে আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহ:) মাজার ও মসজিদে হামলা চালিয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা মুফতি ইদ্রিস রেজভী, সৈয়দ অছিয়র রহমান প্রমুখ।