রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিনটি চুক্তি হয়েছে।
Published : 20 Apr 2013, 05:58 PM
২০১১ জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক হয়, যাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের বিষয়টি ছিল।
এরপর রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
অবশ্য রামপালে প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবন হুমকির মুখে পড়বে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞ ও রামপালের স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাই কোর্টও সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন না করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।
অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই বলা হচ্ছে, পরিবেশ দূষণ ও প্রতিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সর্তক থেকেই রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, “বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা দিয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তারই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।”
বর্তমানে দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের বড় অংশ আসছে তেলভিত্তিক কেন্দ্র থেকে, যার উৎপাদন খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি। তাই জ্বালানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব বাড়ছে।
বাগেরহাটের রামপাল ছাড়াও চট্টগ্রামে প্রায় বেসরকারিখাতে প্রায় ১৩০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এ দুটি কেন্দ্রের জন্যই বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করা হবে।
এদিকে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়াও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গ্রিড নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে বলে চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হবে দুইদেশের সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বলে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি নামে একটি কোম্পানিও গঠন করা হয়েছে।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুপ রায় চৌধুরী বলেন, এটি ভারতের বাইরে এনটিপিসির সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। তাই এটি আমাদের কাছে খুবই উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্প।
বাংলাদেশ ভারত যৌথ উদ্যোগেরও এটি সবচেয়ে বড় প্রকল্প বলে অনুষ্ঠান জানান ঢাকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদুত পঙ্কজ শরন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিপু মনি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, ভারতের বিদ্যুৎ সচিব পি উমাশঙ্কর।