মোবাইল ফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার মূল অংশ বেজ ট্রান্সসিভার স্টেশন (বিটিএস, যা সাধারণভাবে মোবাইল টাওয়ার নামে পরিচিত) ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার ক্ষেত্রে বিটিআরসির অনুমতি মিলেছে।
Published : 17 Jan 2013, 04:53 PM
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি কমিশনের বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন থেকে সহযোগী প্রতিষ্ঠান দিয়ে কোম্পানি গঠন করে বিটিএস ব্যবস্থাপনা করা যাবে।
মোবাইল ফোন অপারেটর রবি এই আবেদন করেছিল। এই অনুমতির ফলে রবি তাদের বিটিএসগুলো নিয়ে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারবে এবং বিটিএস ভাড়া বা অন্য অপারেটরদের অংশীদার করতে পারবে।
অন্যান্য অপারেটরগুলো আবেদন করলে তারাও অনুমতি পাবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
অপারেটরদের খরচ কামানো ও বিটিএসের বিভিন্ন রকম ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে সুনীল বোস বলেন, “একটি বিটিএস বিভিন্ন অপারেটররা ব্যবহার করতে পারলে খরচ অনেক কমে যাবে, অনেক অপারেটরদের নতুন করে আর বিটিএস স্থাপন করতে হবে না।”
বিটিএস স্থাপনে অতিরিক্ত জায়গার ব্যবহারও এর ফলে কমবে বলে জানান তিনি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ সেবা আরো সহজলভ্য হবে। যেসব অপারেটরদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিটিএস নেই, তারা অন্য অপারেটরের বিটিএস ভাড়া করে সেখানে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
“একে অন্যর বিটিএস শেয়ার করতে পারায় নতুন করে বিটিএস স্থাপনের খরচ থাকবে না, এর ফলে টেলিযোগাযোগে খরচও কমে আসবে।”
এর জন্য সরকারের জন্য কোনো ট্যারিফ দিতে হবে না জানিয়ে সুনীল বোস বলেন, অপারেটরা নিজস্ব সমঝোতায় চুক্তি স্বাক্ষর করবে।
পাশের দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশেও বিটিএস কোম্পানি কাজ করছে বলে জানান তিনি।
মূলত টাওয়ারের ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে এবং অর্থ সাশ্রয়ে অপারেটরা এ উদ্যোগ নিচ্ছে।
অপারেটরদের টাওয়ারের ব্যবস্থাপনায় বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের পাশাপাশি অনেক জনবলও নিয়োগ করতে হয়।
এছাড়া বিটিএস স্থাপনের জন্য ভূমি ও বিদ্যুৎ সমস্যাসহ আরো কিছু সমস্যার কারণে এ থেকে সরে আসতে চাইছে অপারেটরা।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ছয় মোবাইল অপারেটরের ৩৩ হাজারের বেশি বিটিএস রয়েছে।
চার কোটির বেশি গ্রাহক সংখ্যা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোনের বিটিএস রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার। গ্রাহক সংখায় তৃতীয় অপারেটর রবির প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বিটিএস রয়েছে।
বিটিআরসির হিসোবে, গত বছর নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার।