নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় খুন হন এই চিকিৎসক নেতা।
Published : 25 Aug 2012, 10:47 AM
হত্যাকাণ্ডের দুদিনের মাথায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার বিকালে তাদের মধ্যে চারজনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন করে গোয়েন্দা পুলিশ। অন্যদিকে র্যাব গ্রেপ্তার করে অন্যজনকে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আবাসিক ভবনে খুন হন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পর্ষদের সদস্য নারায়ণ দত্ত।
গ্রেপ্তার ফয়সল পুলিশ হেফাজতে সাংবাদিকদের বলেন, ডাকাতি করতে গিয়ে বাধা পাওয়ায় তাদের এক সঙ্গী একজন ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। এর পরে সকালে তারা শোনেন, ছুরিকাহত ব্যক্তি মারা গেছেন।
গোয়েন্দা পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয় গ্রেপ্তার চারজনকে। ফয়সল (৩২) ছাড়া অন্য তিনজন হলেন- পেদা মাসুদ (২৮), সাইদুল (৩৮) ও পিচ্চি কালাম (৩৫)।
ফয়সল জানান, তারা ডাকাতি করতে সাতজন গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে তিনিসহ চারজন গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে ঢোকেন।
“তিনি (ডা. নারায়ণ) ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। তিনি টের পাওয়ার পর হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। ওই সময় মিন্টু (ডাকাত দলের সদস্য) তার শরীরে ছুরিকাঘাত করে। অবস্থা খারাপ দেখে আমরা কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাই,” বলেন গ্রেপ্তার এই ব্যক্তি।
পিচ্চি কালাম সাংবাদিকদের জানান, ডাকাতির সময় তাদের সাথে কামাল নামেও একজন ছিলো।
র্যাবের মুখপাত্র এম সোহায়েল জানিয়েছেন, তারা কামাল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ডাকাতি করার সময় বাধা দেওয়ায় ডা. নারায়ণ খুন হয়েছেন।
“তবে এটাই চূড়ান্ত নয়। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিকসহ অন্য যেসব বিষয়ে কথা উঠেছে, সেগুলোকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সবগুলোই যাচাই করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ নেতা নারায়ণ খুন হওয়ার পর সংগঠনের কোন্দল এবং বক্ষব্যাধি হাসপাতালের নিয়োগ নিয়ে বিরোধের কথাও বিভিন্ন জনের কথায় উঠে আসে।
পুলিশ আগেও এই ঘটনাটিকে ডাকাতি বলে উল্লেখ করলেও নারায়ণের স্ত্রী ডা. লাকী দত্তের দাবি, তার স্বামী পরিকল্পিত হত্যাকা-ের শিকার।
মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার হওয়া চারজনই ডাকাতিতে অংশ নিয়েছিল। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, চাপাতি, লুণ্ঠিত হাতের বালা, রক্তমাখা গেঞ্জি-লুঙ্গি-তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় অন্য যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, বলেন তিনি।
কামরাঙ্গীর চর এবং মহাখালী এলাকা থেকে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে দুজনকে বনানী থানা পুলিশ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই হত্যার ঘটনার পর পুলিশ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
নারায়ণ হত্যাকাণ্ডের পর বাবা তড়িৎ কান্তি দত্ত বনানী থানায় একটি মামলা করেছেন।