ঢাকা, জুন ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার পালিত হচ্ছে।
সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ছাত্রফ্রন্ট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে কয়েকটি সংগঠন।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে বিকাল চারটায় ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে 'জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা', আলোচনা সভা ও জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান।
এছাড়া সাড়ে চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে 'জাহানারা ইমাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের রাজনীতি' শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ছাত্র ফেডারেশন।
দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভোগার পর ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন মারা যান জাহানারা ইমাম। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে শফি ইমাম রুমী শহীদ হন এবং স্বামী শরীফ ইমামও ওই সময়ে মারা যান।
লেখিকা জাহানারা ইমাম (ডাক নাম জুডু) ১৯২৯ সালের ৩ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আব্দুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম।
তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'একাত্তরের দিনগুলি'। সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে 'বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কার' ও 'কমর মুষতারী সাহিত্য পুরস্কার' লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি।
ঘাতক দালাল-নির্মূল কমিটির আন্দোলন যেভাবে
১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমির ঘোষণা করলে দেশে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।
বিক্ষোভের অংশ হিসাবে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যের একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয়। তিনি ছিলেন এর আহ্বায়ক।
এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ 'গণআদালত' এর মাধ্যমে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের 'নরঘাতক' গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার শুরু করে।
গণআদালতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম তার (গোলাম আযম) ১০টি অপরাধই মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।
ওই সময় জাহানারা ইমাম গণআদালতের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
গণআদালতের অন্য সদস্যরা ছিলেন- অ্যাডভোকেট গাজিউল হক, ড. আহমদ শরীফ, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সুফিয়া কামাল, কবীর চৌধুরী, কলিম শরাফী, শওকত ওসমান, সেক্টর কমান্ডার কাজী নুরুজ্জামান ও আবু ওসমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার শওকত আলী খান প্রমুখ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এআরআর/আরএ/১৪৩৮ ঘ.