ঢাকা, মে ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে নিয়োগ পাওয়া এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মূল্যায়ন পরীক্ষার পর নিয়োগ বাতিল হওয়া ৮৫ জন উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রায় তিন বছর পর চাকরি ফিরে পেয়েছেন।
তাদেরকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালতের রায় অনুযায়ী ইসির এক প্রজ্ঞাপনে সোমবার তাদের যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফেরদাউস রওশন আরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, ৮৫ কর্মকর্তার সবাই যোগদান করেছেন।
ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মো. শাহজাহান মিয়া স্বাক্ষরিত ১৩ মে'র ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৮৫ উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ১৭ মে তারিখের পূর্বাহ্নে ইসি সচিবালয়ে যোগদান করতে হবে।
তারা ২০০৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ মে ২০১০ সাল পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চাকরিতে কর্মরত ছিলেন বলে গণ্য হবেন। বিধি বিধানের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিজ নিজ কর্মস্থল হতে প্রাপ্য হবেন।
প্রজ্ঞাপনে আরো জানানো হয়, প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালতের (১৩৪, ১৩৯, ১৪৩ ও ১৪৪/২০০৯) মামলার রায় এবং ২০১০ সালের ১১ মে কমিশনের ২৯৪তম সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ৮৫ জন উপজেলা/থানা কর্মকর্তার শিক্ষানবিশকাল অবসান সংক্রান্ত ইসি সচিবালয়ের ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারিখের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে তাদের কর্মস্থলে নিয়োগ/পদায়ন করা হলো।
থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিযুক্ত ছিলেন। নতুন করে পদায়ন করা হয়েছে কেরানীগঞ্জে।
তিনি বলেন, "সোমবার সকালে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী সচিবালয়ের উপজেলা/থানার দায়িত্বশীল সিনিয়র সহকারী সচিব ফেরদাউস রওশন আরার কাছে যোগদানের বিষয়টি অবহিত করেছি।"
আশরাাফ আলী নামের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের সবাই একইভাবে অবহিত করেছেন। তিনি মৌলভীবাজারের রাজনগরে যোগদান করেছেন। আগে ছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুরে।
১৮ মে থেকে ইলেকশন ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের দলীয় বিবেচনায় ৩২০ উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ পাওয়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সে সমালোচনা আমলে নেননি তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এমএ আজিজ।
এরপর ২০০৭ সালের ফেব্র"য়ারি মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক গোপন প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রসঙ্গে দলীয় বিবেচনা ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তাদের নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরে ইসি সচিবালয়কে সুপারিশ করা হয় যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব কর্মকর্তার কারণে কমিশনকে যাতে বিড়ম্বনার শিকার না হতে হয় সে লক্ষ্যে অবিলম্বে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তের প্রয়োজন।
ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরের মাসে বর্তমান সিইসি এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন এসব কর্মকর্তার শিক্ষানবিশকালে যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
মে মাসে ওই পরীক্ষা হয়। তারপর নিয়োগবিধি অনুযায়ী উত্তীর্ণদের চাকরি স্থায়ী করে ইসি। অনুত্তীর্ণ ৮৫ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর আদালতে যান তারা।
সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে ওই ৮৫ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক আপিল ট্রাইবুনাল আদালত রায় দেয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এজে/১৬১৮ ঘ.