চট্টগ্রামে এ মাসের শুরুতে যে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছিল, ফেইসবুকে সম্পর্কের পর কক্সবাজারে দেখা করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 08 Jun 2022, 05:50 PM
আত্মহত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে নেমে দুই জনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ড্রিমল্যান্ড আবাসিক এলাকায় ৩ জুন ভোরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বোনের করা মামলায় তদন্তে নেমে রুবেল (১৯) ও জিসানুল ইসলাম (২০) নামে দুইজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পরে মঙ্গলবার ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মুক্তা ধর বলেন, সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তদন্তে নেমে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ওই দুই যুবকের সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ।
“জিসানুল বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকায় একটি মিষ্টির কারখানায় কাজ করত। এক বছর আগে দশম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ফেইসবুকে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
“পরে জিসানুল বেশি বেতনের চাকরিতে কক্সবাজারে নতুন কর্মস্থলে চলে যায়। সেসময় মোবাইলে নিয়মিত যোগাযোগের এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে কক্সবাজারে যেতে বলে জিসানুল।”
মুক্তা ধর বলেন, “কথামতো ওই ছাত্রী তার এক বান্ধবীকে নিয়ে গত ৩১ মে কক্সবাজারে দেখা করতে যায়। সেখানে পৌঁছে যোগাযোগ করলে জিসানুল ব্যস্ত আছে জানিয়ে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং চট্টগ্রামে ফিরে যেতে বলে।
“সেসময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ওই ছাত্রী তার বান্ধবীর সঙ্গে একটি টমটম নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে টমটমচালক রুবেল ওই ছাত্রীর কাছ থেকে ঘটনা জেনে তাকে জিসানুলের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়।”
রুবেল ওই ছাত্রীকে বলেন, জিসানুল তার পূর্বপরিচিত। তিনি যেভাবেই হোক জিসানের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবেন। পরে টমটম চালকের কথা বিশ্বাস করেন ওই শিক্ষার্থী।
“পরে রুবেল ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা বান্ধবীকে চট্টগ্রামগামী একটি বাসে তুলে দেয়। আর মেয়েটিকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ৬ নম্বর ঘাটের কাছে ‘হোটেল আলামিনে’ নিয়ে যায়। সেখানে রাতে জিসানুল দেখা করবে- এমন কথা বলে হোটেলের একটি কক্ষে তুলে দেয়।”
মুক্তা ধর বলেন, “পরে জিসানকে নিয়ে এসেছেন- এমন দাবি করে রুবেল হোটেল কক্ষে প্রবেশ করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।”
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ওই ছাত্রী ১ জুন রাতে চট্টগ্রামের বাসায় ফিরে ক্ষোভে অভিমানে দুদিন পর আত্মহত্যা করে বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার।