কুমিল্লায় ভোট কেন্দ্রে-ভোট কক্ষে থাকবে সিসি ক্যামেরা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্র ও ভোট কক্ষে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে আউটসোর্চিংয়ের মাধ্যমে প্রায় আটশ’ সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2022, 06:44 PM
Updated : 12 May 2022, 06:44 PM

সেই সঙ্গে প্রার্থীর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভোটারদের বায়োমেট্রিকসহ ভোটার তালিকার তথ্য, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য নিয়ে কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএম ‘কাস্টমাইজেশন’ করা হবে।

আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুমিল্লার নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কুমিল্লা সিটি নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত কল্পে এ নির্বাচনে ভোটগ্রহনের জন্য ইভিএম প্রস্তুত (ক্যাস্টমাইজেশন) করা ও বিতরণের সময় প্রার্থীর প্রতিনিধি থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। এ নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্র ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় মনিটরিং এর সুব্যবস্থা থাকবে।”

এ নির্বাচন মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৭ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। এরই মধ্যে আচরণবিধি পালনে কড়াকড়ির আরোপে নিয়মিত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে ৩ জন নির্বাহী হাকিম ও এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।

নতুন ইসির অধীনে সিটি করপোরেশনে এটা প্রথম নির্বাচন। দেড় বছর পর অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সামনে রেখে আস্থা সঙ্কটের মধ্যে ইভিএম নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন উদ্যোগ নিল কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি।

২ লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি ভোটারের কুমিল্লা নগরে ১০৩ কেন্দ্রের ৬৪০টি ভোট কক্ষ থাকবে। ভোটের দু’দিন আগে ১৩ জুন প্রতিটি কেন্দ্রে ‘মক ভোটিংয়ের’ সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিসি টিভি কেন, কোথায় ও কবে নাগাদ ব্যবহার শুরু করতে চায়- সে বিষয়টি তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “ভোটকেন্দ্রে অন্যায় হল কি হল না; ভোটের পরেও অনেক সময় অভিযোগ করা হয়, এটা সঠিক কি না, প্রমাণের জন্য সুবিধা হবে সিসি ক্যামেরা। ক্যামেরা থাকলে যারা অন্যায় করতে চায়, তারা করবে না বলে মনে করি।”

তিনি জানান, নির্বাচনের আগে থেকে সিসি ক্যামেরা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনী মালামাল যখন কেন্দ্রে যাবে, তার আগে থেকেও হতে পারে। ভোট গণনা, ফল প্রকাশের পর আরও কিছু সময় পর্যন্ত তা থাকবে।

“প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে একটি করে (১০৩ কেন্দ্র) এবং কেন্দ্রের ভেতরে প্রতিটি ভোটকক্ষে (৬৪০ ভোট কক্ষ) সিসি ক্যামেরা থাকবে। তবে ভোট কক্ষের যেখানে ভোট দেওয়া হয়, সেই গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকবে না।”

আউটিসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এসব সিসি ক্যামেরা ভাড়া নেওয়া হবে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার।

আচরণবিধি প্রতিপালনে তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এখন থেকেই কুমিল্লায় নির্বাহী হাকিম ও বিজিবি নিয়োজিত থাকবে।

“অনেকে ক্ষেত্রে দেখা যায়, মনোনয়নপত্র জমার দেওয়ার আগে বা জমার সময় নানা রকম আচরণবিধি লঙ্ঘন করে। এ জন্যে আগেভাগেই স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্যে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

নতুন কমিশন বিদ্যমান ইভিএম আইন অনুযায়ী কেন্দ্রভিত্তিক যন্ত্রগুলো প্রস্তুতের সময় দলের প্রতিনিধিও রাখতে বলে জানান তিনি।

ইসি আলমগীর বলেন, “ইভিএম কাস্টমাইজেশনের সময় সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা থাকবে। এটা আস্থা তৈরিতে সহায়ক হবে। এছাড়া আইন অনুযায়ীও তা করতে বাধ্যও আমরা।”

নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের ভোটারদের বায়োমেট্রিকসহ ভোটার তালিকার তথ্য, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য ইসি অনুমোদিত প্রোগ্রামের মাধ্যমে অডিট কার্ড, পোলিং কার্ড এসডি কার্ডে সংরক্ষণ করাকে এক্ষেত্রে ‘কাস্টমাইজেশন’ বলা হচ্ছে।

প্রতিটি ভোট কক্ষে যে ইভিএম থাকবে, সেখানে সংশ্লিষ্ট ভোটার ও অন্যদের তথ্য রাখা হয়। এতে ভোটার ভোট কক্ষে যাওয়ার সময় তা যাচাই করে ব্যালট ইউনিটে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকে।