পি কে হালদারের অর্থ পাচার: বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ

বিদেশে পলাতক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে কয়েকটি মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 01:19 PM
Updated : 24 Jan 2022, 01:19 PM

তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি দল সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে কমিশন সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির, এ বি এম মোবারক হোসেন, উপ-পরিচালক মো. হামিদুল আলম ও সহকারী পরিচালক মো. কাদের আলী।

জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তারা কেউ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে দুদক সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “ফাস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং পিপলস লিজিং থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো মর্টগেজ ছাড়াই লেয়ারিং করে পিকে হালদার গং আত্মসাৎ ও পাচার করেছে। এ অপরাধে ইতোমধ্যে দুদক ২২টি মামলা করেছে।

“এসব কোম্পানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিং দুর্বলতা, অডিট প্রতিবেদনে তথ্য গোপন এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটন ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কী কী দুর্বলতা ছিল এ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করার জন্য ওই চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্য কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও বক্তব্য নেওয়া হবে।”

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চার কর্মকর্তাকে নোটিস পাঠিয়ে সোমবার তলব করে দুদক।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পি কে হালদারের বিদেশ পালিয়ে যান।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।

এসব অভিযোগে দুদকে আলাদা অনুসন্ধান ও তদন্ত করছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।