নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা ও দেশজুড়ে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া চালুসহ ১১ দফা দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
Published : 11 Dec 2021, 06:27 PM
শনিবার রামপুরা ব্রিজে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ‘নিরাপদ সড়ক ও হাফপাস আমাদের অধিকার’ শ্লোগান নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক ও শ্রমিকেরা যোগ দেন।
সমাবেশের সঞ্চালক খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ১১ দফা দাবি নিয়ে আজকে সমাবেশ হয়েছে।
“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সড়ক আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, এটা সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলন।”
সমাবেশে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহম্মদ, অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে যাত্রী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জাকির হোসেন, শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে রাইড শেয়ার এন্ড সার্ভিস ডেলিভারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্য সচিব রিয়াজ মাহমুদ ও ঢাকা জেলা ট্যাক্সি ইউনিয়নের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
>> সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাইম ও মাইনউদ্দিনের হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
>> সারা দেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফপাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
>> গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
>> ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দৃর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক ফুট এক বাস এবং দৈনিক আয় সব পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুযায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।
>> শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তি ভিত্তিতে বাস দেওয়ার বদলে টিকেট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।
>> গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
>> যাত্রী-পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
>> ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করে নিতে হবে।
>> মাদকাসক্তি নিরসনে গোটা সমাজজুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।