বিতর্কিত কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী লাকী আকতারকে টাঙ্গাইলে এক পীরের দরগা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
Published : 04 Nov 2021, 05:33 PM
এর আগে গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ঢাকার মিরপুরে এই প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েও সেদিন জসিমকে র্যাব পায়নি। তিনি পালিয়ে যান স্ত্রীকে নিয়ে।
জসিম ও তার স্ত্রী লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার র্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগের অভিযানে গ্রেপ্তার ১১ জনের দেওয়া তথ্যে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরের সিরাজকান্দি গ্রামের একটি দরবার শরিফে থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“কখনও কোনো বিপদে পড়লে জসিম উদ্দিন সেখানে আত্মগোপন করত। এর আগেও সে এই দরবার শরীফে আত্মগোপন করেছিল।”
জসিমের বিরুদ্ধে মিরপুর এলাকায় কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি খুলে নিম্ন আয়ের মানুষদের বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে মাসিক ভিত্তিতে টাকা জমা নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
যারা টাকা জমা রাখতেন, তারা সময় হওয়ার পরও তা ফেরত না পেয়ে র্যাবের কাছে অভিযোগ করে। তখন র্যাব অনুসন্ধানে নামে।
জসিমকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে বনানীতে জসিম ওভারসিজের অফিসে এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পিস্তল, ইয়াবা, প্রায় এক লাখ জাল টাকা উদ্ধার এবং দুটি গাড়ি জব্দের কথা জানিয়েছে র্যাব।
মুন্সিগঞ্জ জেলার জসিম নিজেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার দাবি করলেও এসএসসির পর তার পড়ালেখা এগোয়নি বলে র্যাব জানতে পেরেছে।
একটি বেরসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে কিছু দিন চাকরি করেছিলেন জসিম। তারপর ২০০৩ সালে তিনি কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে নিজেই কোম্পানি খুলে বসেন।
নিবন্ধিত এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা কাগজ কলমে ৫৩৭ জন হলেও অবৈধভাবে তারা সদস্য সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ হাজার করেছে বলে র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন।
জয়িতা শিল্পী বলেন, “এসব সদস্যদের এফডিআর-ডিপিএস এর টাকা সরিয়ে স্ত্রী-সন্তানের নামে ঢাকা ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় ফ্ল্যাট, প্লট, জমি, কোটি টাকা দামের প্রাডো গাড়ি ও প্রাইভেটকার কিনেছিল জসিম। সেইসাথে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তুলে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছে।”
মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী খুনে ৪ জন গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারের চৈত্রঘাট বাজারে ব্যবসায়ী সমিটির সভাপতি নাজমুল হাসানকে (৩৬) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তাদেরকে বুধবার রাতে যাত্রাবাড়ী ও সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- বাবর মিয়া (২৮),রাসেল মিয়া (৩২),মাসুদ মিয়া (৪২) ও মরদিছ মিয়া (৬৮)।
গত ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে প্রকাশ্য সন্ত্রাসীরা রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নাজমুল হাসানের বড় ভাই শামসুল হক কমলগঞ্জ থানায় ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “পারিবারিক এবং ব্যবসায়িক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে নাজমুল হাসানের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার সন্তানদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল।
নাজমুল হাসানের দলের হামলায় নাইছ মিয়ার সন্তান জুয়েলের পা ভেঙ্গে যায় বলে জানা যায়। এছাড়া আসন্ন ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল।”
গ্রেপ্তারদের মধ্যে বাবর ও রাসেল ভাই, আবার তোফায়েল ও জুয়েলও ভাই।