আফগানিস্তানে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে এক যোগে কাজ করার কথা বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
Published : 07 Sep 2021, 12:58 AM
সোমবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তাদের এই বিষয়ে সহমতে পোষণ করেন বলে ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশন ও লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ হাই কমিশনের সং বাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে একত্রে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আফগানিস্তানের জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, দেশটির টেকসই ভবিষ্যতের জন্য আফগানদের কথা শোনা উচিৎ।
অন্যদিকে, ব্রিটিশ হাই কমিশন বলেছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর উপর বৈঠকে জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাব।
বৃহস্পতিবার লন্ডনে সশরীরে এই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও আফগান পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের বাইরে সফরের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
সোমবার ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লন্ডন থেকে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের হেগ থেকে যুক্ত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে দুই দশক পর সে দেশের ক্ষমতা দখল করেছে তালেবান।
কট্টর এই ইসলামী দলের সরকারের সঙ্গে প্রয়োজনে সম্পর্ক গড়ার কথা বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেছেন, আফগান জনগণ যা চায়, তা মেনে নেবে বাংলাদেশ।
নিজেদের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দৃঢ় সম্পর্কে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন মোমেন ও রাব।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্কের পঞ্চাশ বছরকে স্বাগত জানান রাব।
২৬তম আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৬) সামনে রেখে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্যোগে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সঙ্কট এবং তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কাজ থমকে থাকার কথা বিষয়টি বৈঠকে তোলেন মোমেন।
বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে রোহিঙ্গা সং কট সমাধানে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত অঙ্গীকারের বিষয় পুনর্ব্যক্ত করেন ডমিনিক রাব।
আসিয়ান ও জি-৭ দেশগুলোকে নিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানে মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
ব্রিটিশ হাই কমিশন জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
একই সঙ্গে বাংলাদেশে তাদের সম্মানজনক জীবন নিশ্চিতে, রাখাইনে তাদের ফেরানোর কাজে ও মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগের বিষয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
প্রথম যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ বাণিজ্য সংলাপকে স্বাগত জানিয়ে দু’দেশের ব্যবসায় আরও সুদৃঢ় করার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।